কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল। —ছবি : সংগৃহীত
সরকারি হাসপাতালে চলছে দালাল চক্র! এমনই অভিযোগ উঠছে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে। রোগীর পরিজনের একাংশের অভিযোগ, হাসপাতালের বদলে বাইরে থেকে রোগী স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষা করাতে ওই চক্র তাঁদের উপরে চাপ সৃষ্টি করছে এবং টাকাও নিচ্ছে। এ নিয়ে কোথাও লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও বিষয়টি যে কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে, তা জানাচ্ছেন খোদ হাসপাতাল সুপারও।
৩০ শয্যা বিশিষ্ট কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল শুধু কাঁথি নয়, আশেপাশের খেজুরি, রামনগর, ভগবানপুর, দিঘা, এগরা মহকুমার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালের সামনে রয়েছে একাধিক ল্যাবরেটরি। অভিযোগ, দালালরা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রোগীদের সেখানে পরীক্ষা করানোর জন্য মোটা অঙ্কের টাকা নিচ্ছে। অথচ কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফির মতো বিভিন্ন পরিষেবা চালু রয়েছে।
হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী জানাচ্ছেন, শুধু হাসপাতালের সামনের দোকানদাররা নয়, কাঁথি শহরের নানা প্রান্তের পরীক্ষাগারের লোকজনেরাও নিয়মিত হাসপাতাল চত্বরে ঘোরাঘুরি করছেন। নতুন কোনও রোগী ভর্তি হতে এলে তাঁদেরকে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে বাধ্য করাচ্ছেন। চিকিৎসকদের একাংশ জানান, রোগীরা ভর্তি হলেই যে কোন অসুখে 'ট্রপটি' পরীক্ষা করাচ্ছেন দালাল চক্রের সঙ্গে জড়িতরা।
গোটা মহকুমা হাসপাতাল জুড়ে রয়েছে অসংখ্য সিসি ক্যামেরা। জরুরি পরিষেবা কেন্দ্রে ঢোকার মুখে সর্বক্ষণ নিরাপত্তা রক্ষী থাকেন। এছাড়া, কয়েকজন সিভিক ভলেন্টিয়ারও সেখানে থাকেন। তার পরেও সরকারি হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে গিয়ে কীভাবে বেসরকারি পরীক্ষাগারের কর্মীরা রোগীর শরীর থেকে নানা রকমের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের সুপার অরূপ রতন করণ বলছেন, ‘‘বাইরে থেকে কিছু কিছু লোকেরা এসে নানা রকমের পরীক্ষার নমুনা রোগীর শরীর থেকে নিয়ে যাচ্ছে বলে জেনেছি। জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক এবং নার্সদের সতর্ক করা হয়েছে। রোগীরা যাতে ভর্তি হওয়ার পর তাদের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা হাসপাতাল থেকেই করাতে পারেন, সে জন্য তাদের পরিবারের লোকেদের সচেতন করা হচ্ছে।’’
এত কাণ্ডের পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন দালাল চক্র সম্পূর্ণ বন্ধ করতে পারেনি?
এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক কুমার দেওয়ান বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনও লিখিত অভিযোগ হাতে পায়নি। তবে বিষয়টি হাসপাতালে সুপারকে তদন্ত করে দেখার জন্য বলব।’’