কোমরে দড়ি শচীন্দ্রের। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ ২৪ বছর পর স্ত্রী’কে খুনে দোষী সাব্যস্ত হলেন এক ব্যক্তি। শুক্রবার শচীন্দ্রনাথ দাস নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় কাঁথি মহকুমা আদালত। আদালতের শুনানি শেষে দেশপ্রাণ ব্লকের বাড় ছনবেড়িয়ার বাসিন্দা শচীন্দ্রনাথকে আদালত থেকে বার করা হলে, তাঁর কোমরে দড়ি পরানো ছিল। এই ঘটনায়ই বিতর্কও হচ্ছে।
আইনজীবী সূত্রের খবর, ১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল সঞ্চিতা দাস (২২) নামে এক তরুণীকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। নাচিন্দার বাসিন্দা সঞ্চিতার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল শচীন্দ্রনাথের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সঞ্চিতার উপরে পণের জন্য চাপ দেওয়া হত। তাই তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সঞ্চিতার দাদা। মৃতার পরিবারের তরফে অভিযোগ ছিল, জলসেচের মেশিন কিনতে বাপের বাড়ি থেকে সঞ্চিতাকে সাত হাজার টাকা জোগাড় করে আনতে বলেছিল শচীন্দ্রনাথ। তাতে রাজি হয়নি সঞ্চিতা। এর পরই তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল শচীন্দ্রনাথ।
অভিযোগের ভিত্তিতে শচীন্দ্রনাথ, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ভাসুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মামলায় ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। বিচার চলাকালীনই অভিযুক্ত সঞ্চিতার শাশুড়ি মারা যান। প্রমাণের অভাবে শচীন্দ্রনাথের বাবা এবং তার দাদাকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে আদালত। কিন্তু এ দিন শচীন্দ্রনাথকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে অতিরিক্ত এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় কাঁথি মহকুমা আদালত। পাশাপাশি পণ আদায়ের অভিযোগে, তিন বছরের জন্য কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে অতিরিক্ত এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় ।
এ দিন আদালত থেকে শচীন্দ্রকে বার করার সময় দেখা যায়, পুলিশ তার কোমরে পুলিশ দড়ি পরিয়ে রেখেছে। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ কোমরে দড়ি পরানোর আগে পুলিশকে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে শচীন্দ্রনাথকে দড়ি পড়ানো হল কেন? এই প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ ভি সলমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘দাগি অপরাধীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের কিছু পদক্ষেপের রীতি হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সেটা নেওয়া হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’’