নতুন করে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা হয়েছে ঘাটাল পুর-শহরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
করোনা নিয়ন্ত্রণে দাসপুরে পুরোপুরি লকডাউনের পথে হাঁটতে চলেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার ঘাটালের মহকুমা শাসকের দফতরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার, ঘাটাল, দাসপুর ১ ও ২ বিডিও ও দাসপুর থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, পুরো দাসপুর ১ ব্লক এবং দাসপুর ২ ব্লকের একটা বড় অংশে পুরোপুরি লকডাউন করা হবে। তবে আপাতত তা প্রস্তাবের আকারেই রয়েছে। সে প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। মহকুমা শাসক অসীম পাল বলেন, “মহকুমায় সংক্রমণ বাড়ছে। দাসপুরে পরিস্থিতির কথা ভেবে দাসপুর-১ ব্লকের পুরো এলাকা ও দাসপুর-২ ব্লকের বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকায় পুরোপুরি লকডাউন করার একটি প্রস্তাব জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। আপাতত সাতদিনের লকডাউন করা হবে। জেলা প্রশাসনের অনুমতি পাওয়ার পর অবশ্য পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঘাটাল-দাসপুরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার ঘাটাল থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার- সহ ১৩ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এই মুহুর্তে দাসপুরের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। এখন দাসপুরে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪৫ জন। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দাসপুরের একটি বড় অংশ পুরোপুরি লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিল ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রের খবর, দাসপুর ২ ব্লকের কোন কোন অংশে লকডাউন হবে তা ইতিমধ্যেই চিহ্নিত হয়েছে। যদিও সে তালিকায় শেষমুহূর্তে কিছু সংযোজন, বিয়োজন হতে পারে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল এই দাসপুরেই। মুম্বই ফেরত এক পরিযায়ী শ্রমিকের সূত্রে জেলায় প্রথম সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। পরবর্তী সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকেরা রাজ্যে ফিরলে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। মে- জুন মাস নাগাদ ঘাটাল-দাসপুরে একসঙ্গে ১০০ জনেরও বেশি সক্রিয় করোনা রোগী ছিলেন। এই অংশে একসঙ্গে ৭০টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকা চিহ্নিত হয়। তবে পরীক্ষার হার কমায় জুন মাসের শেষ নাগাদ আক্রান্তের সংখ্যা কমে যায়। কিন্তু আনলক শুরু হওয়ার পরে স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় ওঠে। ফলে ফের বাড়তে থাকে সংক্রমিতের সংখ্যা। জেলা প্রশাসনের এক তথ্য বলছে, ৬ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পযর্ন্ত দাসপুরে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ জন। ঘাটালেও গত দশ দিনে ১৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার ঘাটালে সাত জন এবং দাসপুরে ছ’জন আক্রান্ত হয়েছেন।প্রত্যেককে শালবনি করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।ঘাটালে সাত জনের মধ্যে এক সিভিক ভলান্টিয়ার।বাকি পাঁচ জনের চার জন বেঙ্গালুরু ও একজন মুম্বই থেকে ফিরেছিলেন। দাসপুরে ছ’জনই পরিযায়ী শ্রমিক।জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে তাঁরা মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছিলেন।১৩ জুলাই প্রত্যেকের লালারস নেওয়া হয়। বুধবার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, “মাস্ক পরার অভ্যাস সচেতনতা বাড়াতে মহকুমা জুড়ে পুলিশি অভিযান জোর দেওয়া হয়েছে।”
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে