মেদিনীপুর স্টেশন থেকে আটক করা হল বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি শঙ্কর গুছাইতকে। —নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার ছিল নবান্ন অভিযান। আর সোমবার রাত থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরের নানা প্রান্তে বিজেপি নেতা-কর্মীদের আটক করা শুরু হয়। সকালে নবান্নে যাওয়ার আগে স্টেশনেও চলে ধরপাকড়। বিজেপির অভিযোগ, অভিযান ভেস্তে দিতেই পুলিশকে ব্যবহার করেছে তৃণমূল।
মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর স্টেশন থেকে পুলিশ আটক করে বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি শঙ্কর গুছাইতকে। দুপুরে তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। পুলিশের এক সূত্রে খবর, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবেই এই পদক্ষেপ। নবান্ন অভিযানে শামিল হতেই যাচ্ছিলেন শঙ্কর। ট্রেন ধরতে মেদিনীপুর স্টেশনে গিয়েছিলেন তিনি। দলের আরও নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা সঙ্গে ছিলেন। পুলিশ স্টেশন থেকে একমাত্র তাঁকেই আটক করে। শুরুতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় খড়্গপুর টাউন থানায়। পরে আনা হয় কোতোয়ালি থানায়।
শঙ্করকে আটক করার সময় বিজেপি নেতা-কর্মীরা স্লোগান তোলেন, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। পুলিশের উদ্দেশে শঙ্কর বলেন, ‘‘গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন?’’ ট্রেন ধরতে স্টেশনে এসে পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হন বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ। তন্ময়ের দাবি, ‘‘নবান্ন অভিযানে যাতে ছাত্র-যুবরা যেতে না পারেন, সে জন্য গোটা কেশপুর জুড়েও পুলিশ তাণ্ডব করেছে। ১২ জনকে ধরেছে যাঁদের নবান্নে যাওয়ার কথা ছিল। সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করতে চেয়েছে পুলিশ।’’ তৃণমূলের দাবি, নবান্ন অভিযান থেকে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা চালিয়েছে গেরুয়া শিবির। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক আশিস চক্রবর্তীর খোঁচা, ‘‘ছাত্র-যুব কেউই ওদের ডাকে সাড়া দেয়নি।’’
সোমবার রাতে ডেবরা থানায় অবস্থানে বসেছিলেন বিজেপির ঘাটাল জেলার সভাপতি তন্ময়। সঙ্গে কর্মী-সমর্থকরাও ছিলেন। তাঁরা দাবি করেন, ধামতোড় থেকে অন্যায়ভাবে বিজেপির ডেবরা ৩ নম্বর মণ্ডলের সহ-সভাপতি বিপ্লব দিন্দাকে থানা তুলে আনা হয়েছে। বিপ্লবের বাড়ি ডেবরা থানার চকসুজাল গ্রামে। কেন গ্রেফতার, জানতে চান বিজেপির জেলা সভাপতি। পুলিশ কারণ স্পষ্ট করেন, এই অভিযোগে থানা চত্বরেই রাত পর্যন্ত ধর্না-বিক্ষোভ চলে। ওসি প্রণয় রাই ধর্না তুলে নিতে বললে ধৃত কর্মীকে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ চলতে থাকে। পরে থানায় পৌঁছন খড়্গপুরের এসডিপিও ধীরজ ঠাকুর। আটকে দেওয়া হয় থানার গেট।
বিজেপি কর্মীরা গেট খুলে ঢোকার চেষ্টা করলে বিশাল পুলিশ বাহিনী কার্যত টেনে হিঁচড়ে তাঁদের বাইরে বের করে দেয়। তন্ময় অবশ্য থানা চত্বরেই ধর্না চালান। পরে তাঁকেও গেটের বাইরে বের করে দেওয়া হয়।ভোরে ওই যুবককে ছাড়ার আশ্বাস দিলে অবস্থান তুলে নেওয়া হয়। পরে তন্ময় বলেন, “আমাদের ওই মণ্ডলের সহ-সভাপতিকে রাস্তা থেকে পুলিশ অনৈতিকভাবে তুলে এনেছিল। ওঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই বলে বাড়ির লোক জানিয়েছে।” মঙ্গলবার সকালে মহকুমাশাসকের আদালত থেকে জামিন পান বিপ্লব।
পুলিশের দাবি, নবান্ন অভিযানের নামে বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল। ওই যুবককে আগাম সতর্কতায় গ্রেফতার করা হয়। বিপ্লব বলেন, “আমাদের কিছু ছাত্রের নবান্নে যাওয়ার কথা ছিল। তাঁরা আমার কাছে ব্যাজ চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, মালটা বাসে আসবে। এতে পুলিশ অন্য কিছু সন্দেহ করে আমাকে তুলে নিয়ে যায়। তবে আমার কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।”