শুভাশিস মাইতি। —নিজস্ব চিত্র।
প্রথমে ধর্ষণ, তারপর গলার নলি কেটে এক কিশোরীকে খুনের অভিযোগ উঠল বেলদার রাধানগরে। সম্পর্কের টানাপড়েনে পড়শি যুবক এই খুন করেছে বলে অভিযোগ। শুক্রবার বাড়ির ছাদে মেলে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, বছর সতেরোর ওই কিশোরীর দেহ। অভিযুক্ত যুবক ২২ বছরের শুভাশিস মাইতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি ভারতী ঘোষ বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।” ধর্ষণের পরই কি কিশোরীকে খুন করা হয়? এসপি-র জবাব, “তেমনই অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তেও এমনটা জানা যাচ্ছে।”
সূত্রে খবর, কিশোরীর সঙ্গে বছর খানেক ধরে সম্পর্ক ছিল শুভাশিসের। শুভাশিস এক সময় ওই কিশোরীকে টিউশন পড়াত। তখন সম্পর্ক গভীর হয়। পুলিশ জানায়, সম্প্রতি মেয়েটি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে রাজি হয়নি শুভাশিস। সেই আক্রোশেই ধর্ষণ এবং খুন। এক পুলিশকর্তার কথায়, “ছাত্রীর সঙ্গে ধৃত যুবকের প্রেম ছিল, এ নিয়ে সংশয় নেই। তবে সে কেন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল, সেটা তদন্ত সাপেক্ষ।” কিশোরীর বাবা বলেন, “মেয়েকে প্রায় বিরক্ত করতে যুবকটি। মেয়ে ওর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতে চায়নি। তাই মেয়েকে খুন করেছে ও।” অভিযোগ মানতে নারাজ শুভাশিসের মা গৌরী মাইতি। তাঁর দাবি, “আমার ছেলে খুন করতে পারে না। ওকে ফাঁসানো হচ্ছে।”
ঘটনাটি ঠিক কী? পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে বোনের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল ওই কিশোরী। শুভাশিস তার মোবাইলে ফোন করে বাড়ির দরজা খুলতে বলে। তারপর ‘কিছু কথা আছে’ বলে কিশোরীকে বাড়ির ছাদে নিয়ে যায়। ছাদেই কিশোরীকে ধর্ষণ করে সে। তার পর ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে গলার নলি কেটে তাকে খুন করে। তবে রাতে যে ওই যুবক বাড়ির মধ্যে ঢুকেছে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি পরিজনেরা। নিহত ছাত্রীর বাবার কথায়, “আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। কোনও শব্দও পাইনি।”
এ দিন সকালে পরিজনেরা দেখেন, বড় মেয়ে ঘরে নেই। পরে বাড়ির ছাদে তার দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর জানাজানি হতেই এলাকায় শোরগোল পড়ে। প্রতিবেশীরা বাড়িতে ভিড় করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। অভিযুক্ত যুবক নিজের বাড়িতেই ছিল। নিহতের পরিজনেরা তার দিকে আঙুল তোলেন। প্রতিবেশীদের সন্দেহও ছিল শুভাশিসের দিকেই। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করে। আজ, শনিবার ধৃতকে মেদিনীপুর আদালতে তোলা হবে।