নন্দকুমার বাজারে রামনবমীর শোভাযাত্রা। রয়েছেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে ডিজে নিয়ে শোভাযাত্রা করার অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র
রামনবমী উৎসবের আয়োজন হয়েছে অরাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনের তরফে। তবে সেই রামনবমী উৎসবেও শাসক এবং বিরোধী শিবিরের নেতা কর্মীদের তৎপরতা ঘিরে ঠাণ্ডা লড়াই চলেছে জেলা সদর তমলুক শহরে।
বৃহস্পতিবার তমলুকের রাজ ময়দানে রামনবমী উৎসবের আয়োজন করেছিল তাম্রলিপ্ত জনস্বাস্থ্য কৃষি ও কুটিরশিল্প মেলা কমিটি। ওই মেলা কমিটির সভাপতি পদে রয়েছেন তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়। এদিন সকাল থেকেই রাজ ময়দানে রামের মূর্তি পুজো, যজ্ঞ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। আর ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র ও তমলুক শহর তৃণমূলের সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া, পুরসভার অধিকাংশ তৃণমূল কাউন্সিলরেরা। রামনবমীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সৌমেন বলেন, ‘‘আমরা শুধু এটুকু বলতে চাই সব দেব-দেবীই আমাদের সমান ভাবে আরাধ্য। সবার প্রতি আমাদের সমান শ্রদ্ধা। তেমন ভাবে সর্ব ধর্মের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। এটা মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের শিখিয়েছেন। রাম নবমীর উৎসব সব সম্প্রদায়েরই উৎসব।’’ দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ‘‘মেলা কমিটির উদ্যোগে গত ১২ বছর ধরে রামনবমী উৎসব পালন করা হচ্ছে। রামনবমী উৎসবের আয়োজনে আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা যুক্ত থাকলেও এই উৎসবের সাথে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’
অন্যদিকে, এদিন তমলুক শহরের শঙ্করআড়ায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আয়োজনে রামনবমী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। উৎসবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বহিন্দু পরিষদের অখিল ভারতীয় সহ-সভাপতি শচীন্দ্রনাথ সিংহ। এখানে রামনবমী উৎসবে সক্রিয়ভাবেই যুক্ত ছিলেন বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডলের সভাপতি সুকান্ত চৌধুরী ও সহ-সভাপতি মান্তু হাইত এবং শহরের বিজেপি নেতৃত্ব। রামনবমী উৎসব উপলক্ষে রামের মূর্তিপুজা সহ ধর্মীয় সঙ্গীত, কয়েক হাজার মানুষের প্রসাদ ভোজনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিকেলে উৎসবের প্রাঙ্গণ থেকে শোভযাত্রা বের হয়ে শহর পরিক্রমা করে। রামনবমী উৎসবের আয়োজনে থাকার কথা স্বীকার করে বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডলের সভাপতি সুকান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে শহরে রামনবমী উৎসব আয়োজন করা হয়েছিল। দলীয়ভাবে আমাদের কর্মসূচি না হলেও রামনমবী উৎসবের আয়োজনে আমরা সব রকমভাবে সহযোগিতা করেছি।’’ তবে শুধু তমলুক শহর নয়, মেচেদা, নোনাকুড়ি বাজার, নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, ময়না এবং জেলার বিভিন্ন ব্লকে রামনবমী উৎসব পালন করেছে বিজেপি প্রভাবিত বিভিন্ন সংগঠন। বুধবার সন্ধ্যায় মেচেদা বাজারে রামনবমী উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার সকালে ওই রামনবমী উৎসবের শোভযাত্রায় যোগ দেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
এগরার মির্জাপুরে রামনবমী উদযাপন সমিতির উদ্যোগে নেগুয়া থেকে মির্জাপুর বাজার পর্যন্ত শোভাযাত্রা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শালতোড়ের বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি। পটাশপুরের জুনপুকুর, সিংদা মোড় থেকে ভঞ্জেরপুকুর হয়ে পালপাড়া পর্যন্ত নিরস্ত্র বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা হয়।