মমতাময়ী: শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে মায়েদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্সমূচিতে যোগ দিতে এসে শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আচমকা হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘুরে ঘুরে দেখলেন হাসপাতালের অবস্থা। প্রসূতি বিভাগ ঘুরে দেখে এক যমজ সন্তানের নামও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এক জনের নাম রাখলেন সঙ্গীতা সোরেন। অন্য জনের নাম সঞ্চিতা সোরেন।
শালবনি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু স্টেডিয়াম সংলগ্ন যে মাঠে তৃণমূলের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তার ঠিক পাশেই শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। সভাস্থলে পৌঁছনোর আগে হঠাৎ করে হাসপাতালের দিকে হাঁটতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সভা হাসপাতালের পাশে। তিনি যে হাসপাতালে আসতে পারেন, এমন আভাস ছিলই। তাই প্রস্তুতও ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, প্রাথমিক ভাবে পরিষেবা এবং পরিকাঠামো থেকে খুশি হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনীয় কিছু নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসককে। হাসপাতালে ঢুকে মুখ্যমন্ত্রী চলে গিয়েছিলেন প্রসূতি বিভাগে। সেখানে এক মা তাঁর সদ্যোজাত যমজের নাম দিতে আবদার করেন মমতাকে। শুনেই হেসে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘এক জনের নাম দিন সঙ্গীতা আর এক জনের সঞ্চিতা।’’ এর পর পাশের বেডে চলে যান তিনি। ওই শিশুসন্তানের নাম কী দিয়েছেন, তাঁর মাকে জিজ্ঞেস করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘কী নাম দিয়েছেন?’’ জবাব আসে ‘‘মহম্মদ পাঠান।’’ শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘খুব ভাল নাম।’’ এই ভাবে প্রসূতি বিভাগ ঘুরে মা ও শিশুদের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী। একে একে মায়েদের জিজ্ঞেস করেন কী নাম রেখেছেন সন্তানের।
উল্লেখ্য, শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এই মুহূর্তে স্থায়ী কোনও সুপার বা গ্রামীণ হাসপাতালে স্থায়ী বিএমওএইচ নেই। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নির্দেশিকা প্রকাশিত হলেও, অজানা কারণে যোগদান করেননি স্থায়ী সুপার। দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত বিএমওএইচ স্বর্ণালি দে। চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে রোগী এবং এলাকাবাসীর ক্ষোভ থাকলেও কোনও অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। বরং মুখ্যমন্ত্রীকে এ ভাবে কাছে পেয়ে আপ্লুত শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে রোগী এবং তাঁদের পরিজনেরা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি এবং পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার।
হাসপাতাল পরিদর্শন সেরে বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সভামঞ্চে চলে যান মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেন। পরে মমতাও বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘‘আমাকে ভয় দেখালে আমি গর্জাই। আমাকে বর্ষালে আমি চমকাই। আমাকে টর্নেডো দেখালে আমি তুফান হয়ে যাই। আমাকে রুখে দেওয়া খুব মুশকিল। যত দিন বাঁচব বীরের মতো বাঁচব।’’ পাশাপাশি, দলের নেতা এবং কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘তৃণমূল যদি ঝগড়া না করে তাহলে তৃণমূলকে হঠাবার ক্ষমতা কারও নেই। তৃণমূলের যদি নিজেদের বোঝাপড়া থাকে তা হলে দিল্লিকে লড়ে নেবে। পঞ্চায়েত তো ছোট্ট, বড়টা (লোকসভা) তো বসে আছে। পঞ্চায়েত শক্তিশালী হলে তবে তো বড়টায় জমকালো করে ধাক্কা মারতে পারবেন।’’