অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আটক রাজেশ মাহাতো। —ফাইল চিত্র।
ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা এবং রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় আটক করা হল কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতোকে। শনিবার ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম থেকে রাজেশকে আটক করা হয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।
কুড়মি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিষেকের কনভয়ে হামলার অভিযোগে রাজেশ-সহ ১৫ জনের নামে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের ঝাড়গ্রাম আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূ্ত্রে খবর, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুক্রবার রাতের ওই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মধ্যেই রাজেশের আটক হওয়ার খবর মিলল। সূত্রের দাবি, রাজেশের সঙ্গে আরও এক জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পরেই ‘কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গ’-এর সভাপতি রাজেশ বলেছিলেন, ‘‘ঘুটঘুটে অন্ধকার রাস্তায় কে, কী করেছে, তার দায় আমরা নেব কেন?’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের নাম অনিত মাহাতো, মনমোহিত মাহাতো, অজিত মাহাতো এবং অনুপ মাহাতো। এঁদের মধ্যে অনিত এবং মনমোহিত দু’জনেই গাড়িচালক। অজিত পেশায় চা বিক্রেতা। অনুপ হলেন আদিবাসী নেগাচারি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি। শুক্রবার রাতেই এই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার ঝাড়গ্রাম শহরে ‘নবজোয়ার কর্মসূচি’র ‘রোড শো’ শেষ করে লোধাশুলি হয়ে অভিষেকের কনভয় শালবনির দিকে যাচ্ছিল। সেই যাত্রাপথেই ঘটনাটি ঘটে। ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের দু’ধারে তখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কুড়মি আন্দোলনকারীরা। অভিযোগ, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে ‘চোর চোর’ বলে স্লোগানও দেওয়া হয়। এর পর তৃণমূলের শীর্ষ নেতার কনভয়ের শেষে থাকা মন্ত্রী বিরবাহার গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইটও। তাতে মন্ত্রীর গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে গিয়েছে। তৃণমূলের আরও অভিযোগ, দলীয় কর্মীদের বাঁশ, লাঠি দিয়ে মারা হয়। ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। এই ঘটনার পর আরও কিছু দূর গাড়ি করে গিয়ে নেমে পড়েন অভিষেক। তার পর প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ হেঁটে লোধাশুলিতে ঢোকেন তিনি। সেখানে গিয়ে আবার গাড়িতে উঠে গজাশিমুল এলাকায় দলীয় কর্মসূচির উদ্দেশে রওনা দেন তৃণমূল নেতা।
এই ঘটনার পরই কুড়মি সমাজও পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে। তীব্র নিন্দা করেছেন কুড়মি সমাজের নেতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো। তিনি জানান, এই অবরোধ আদিবাসী কুড়মি সমাজ সংগঠনের ছিল না। তারা সাংবিধানিক আন্দোলনে বিশ্বাসী, উগ্র আন্দোলনে নয়। তাঁর দাবি, কুড়মি আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার জন্য চক্রান্ত করা হতে পারে। এই সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। তাদের আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার চক্রান্ত করা হয়েছে। তারাও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।