Encroachment

নেতাদের মদতে জবরদখল, সংঘর্ষও

‘ল্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ গড়ে সরব হন রায়ত জমির মালিক ও ব্যবসায়ীরা। জবরদখলকারীরাও সুর চড়ায়। মাস খানেক আগে দু’পক্ষকে ডেকে কোনও অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছিলেন মহকুমাশাসক। তাতেও অবশ্য অশান্তি রোখা গেল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২০ ০১:৫৩
Share:

ওটি রোডে গোলমালের সময়ে। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার ধারে পূর্ত দফতরের জমি জবরদখল ঘিরে চাপা অশান্তি ছিলই। বাড়ি ও দোকানের প্রবেশপথ অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধা দিয়েছিলেন রায়ত জমির মালিকেরা। তারপরেও স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মদতে জবরদখল চলছিল বলে অভিযোগ। তার জেরে এ বার রায়ত জমির মালিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধল জবরদখলকারীদের। হল পথ অবরোধ। দু’পক্ষের ৮ জনকে গ্রেফতারও করল পুলিশ!

Advertisement

রবিবার খড়্গপুরের প্রবেশপথ ইন্দার ওটি রোডের এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। এ দিন কমলাকেবিনে সড়কের ধারে পূর্ত দফতরের জমি দখল করে দোকান বসাচ্ছিল স্থানীয় কয়েকজন। জবরদখলকারীদের পাশে এসে দাঁড়ান জেলা তৃণমূল নেতা দেবু গঙ্গোপাধ্যায় ও আশিস সেনগুপ্ত। ক্রমে পরিস্থিতি তেতে ওঠে। রায়ত জমির মালিকেরা আপত্তি তুলে জানান, এ ভাবে রাস্তার ধারে জবরদখল হলে তাঁদের বাড়ি ও দোকানের সামনের অংশ অবরুদ্ধ হয়ে যাবে। সঙ্কীর্ণ সড়কে পার্কিং ঘিরে বাড়বে যানজট। তারপরেও জবরদখলকারীরা দোকান বসাতে গেলে বাধা দেন রায়ত জমির মালিকেরা। তাঁদের সঙ্গে বচসা বাধে ওই তৃণমূল নেতাদের। এর পরেই সংঘর্ষে জড়ায় রায়ত জমির মালিক ও জবরদখলকারীরা। দু’পক্ষই ওটি রোড অবরোধ করে। আসে পুলিশ। সড়ক অবরোধ ও মারপিটের ঘটনায় রায়ত জমির মালিকদের মধ্যে শ্রবণ আগরওয়াল, অতনু পাল, উত্তম চন্দ-সহ ৫জনকে এবং জবরদখলকারী বিশ্বজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ ৩ জনকেও গ্রেফতার করা হয়।

১২০ ফুট চওড়া ওটি রোড জবরদখলের জেরে ৩০ ফুটে ঠেকেছিল। বছর তিনেক আগে চৌরঙ্গী থেকে ইন্দা পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণের সময় নিজেদের খাসজমি পুনরুদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান চালায় পূর্ত দফতর। চৌরঙ্গী থেকে খড়্গপুর কলেজ পর্যন্ত ৪টি লেন ও ফুটপাত গড়া হলেও বাকি অংশের কাজ অবশ্য হয়নি। ২০১৮সালের গোড়ায় নিউটাউন থেকে পুরাতনবাজার পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও রাস্তা চার লেনের করার কাজে নামে পূর্ত দফতর। জবরদখল সরিয়ে সড়ক সম্প্রসারণের সেই কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে সম্প্রসারিত সড়কেই ফের রাজনৈতিক দলের কার্যালয় থেকে অন্য বেআইনি নির্মাণে রুদ্ধ হচ্ছে রায়ত জমির সামনের অংশ।

Advertisement

এ নিয়ে মাস দু’য়েক ধরেই পারদ চড়ছিল। ‘ল্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ গড়ে সরব হন রায়ত জমির মালিক ও ব্যবসায়ীরা। জবরদখলকারীরাও সুর চড়ায়। মাস খানেক আগে দু’পক্ষকে ডেকে কোনও অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছিলেন মহকুমাশাসক। তাতেও অবশ্য অশান্তি রোখা গেল না। জমি মালিকদের পক্ষে মনোজ প্রধান বলেন, “এ ভাবে জবরদখল হলে আমাদের বাড়ি ও দোকানের সামনের অংশ অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অথচ কোনও কথা না শুনে আশিস সেনগুপ্ত ও দেবু গঙ্গোপাধ্যায়রা জোর করে পূর্ত দফতরের জমিতে দোকান বসাচ্ছেন। প্রতিবাদ করায় ওরা বাঁশ নিয়ে মারধর করছিল। অথচ পুলিশ আমাদের লোককেই ধরল।”

জবরদখলকারীদের সমর্থনে তৃণমূলের জেলা নেতা দেবু গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, “দীর্ঘ ৩৫-৪০ বছর ধরে এই ফুটপাতে দোকানিরা ব্যবসা করছিলেন। আমাদের অনুরোধে সড়ক সম্প্রসারণের জন্য তাঁরা ১৫ ফুট জমি ছেড়েও দেন। কারও প্রবেশপথ না আটকেই ৫ফুট জমিতে ট্রলিতে দোকান করছেন। না হলে খাবেন কী?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement