— প্রতীকী চিত্র।
ভোটে জিতলে বেহাল রাস্তা মেরামত করে দেবেন তিনি। লোকসভা প্রচারের শেষ দিনে মাইশোরায় এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব)। কিন্তু ভোটে জেতার ছ'মাস পরও রাস্তার কাজ শুরু হয়নি। অবশেষে জানাবাড় থেকে যশোড়া পর্যন্ত সাড়ে ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করল কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মাধ্যমে তমলুক মহকুমার মোট ১৮টি রাস্তা সংস্কারের জন্যও মিলল কেন্দ্রীয় ছাড়পত্র।
মাইশোরা এলাকাটি পূর্ব মেদিনীপুরের জেলার একেবারে উত্তরের শেষ সীমা। মাইশোরার একদিকে ডেবরা ও অন্যদিকে দাসপুর থানা এলাকা। ২০০৬ সালে পাঁশকুড়া থেকে মাইশোরা হয়ে কেশাপাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার যশোড়া কালীবাজার পর্যন্ত সাড়ে ২১ কিলোমিটার রাস্তাটি পাকা করা হয়। পাঁশকুড়া থেকে বলরামপুর বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি কয়েকবার মেরামত করা হলেও বলরামপুর বাজার থেকে ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের যশোড়া কালীবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রাস্তা গত ১৮ বছরে একবারও মেরামত করা হয়নি বলে অভিযোগ। বলরামপুর থেকে জানাবাড় পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা শোচনীয়।
১২ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার অন্যপ্রান্তে ডেবরা থানা এলাকা। বাকি অংশের পাশে পড়ছে দাসপুর থানা এলাকা। ডেবরা ও দাসপুরের বহু পড়ুয়াকে ওই বেহাল রাস্তা ধরে প্রতিদিন যেতে হয় মাইশোরার সিদ্ধিনাথ মহাবিদ্যালয়, শ্যামসুন্দরপুর পাটনা উচ্চ বিদ্যালয়-সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। দুই মেদিনীপুরের ফুল ও আনাজ চাষিদেরও ওই বেহাল রাস্তা ধরেই উৎপাদিত সামগ্রী বাজারে নিয়ে যেতে হয়।
গত ২৩ মে ছিল ষষ্ঠ দফার ভোটের শেষ প্রচার। ওইদিন বিকেলে মাইশোরা পঞ্চায়েত এলাকার সিমলা হাটে শেষ সভা করেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেব। সে দিন তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ভোটে জিতলে রাস্তাটি মেরামত করবেন। কিন্তু এখনও রাস্তার কাজ শুরু না হওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছিল। এই আবহে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় সাড়ে ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য ১৯ কোটি ৮ হাজার ৮৮৬ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাকিটা দিয়েছে রাজ্য। পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুজিত রায় বলেন, ‘‘জানাবাড় থেকে যশোড়া কালীবাজার পর্যন্ত রাস্তাটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা হবে। ৪ ডিসেম্বর দরপত্রের নোটিস দেওয়া হবে। জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’
তমলুক মহকুমায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ১৮টি রাস্তা সংস্কার করা হবে। যার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১২৬ কোটি ৯৩ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫৬৪ টাকা। ওই টাকায় পাঁশকুড়া ব্লকে ২টি, তমলুকে ১টি, ময়নায় ২টি, কোলাঘাটে ১টি, চণ্ডীপুরে ১টি, ভগবানপুর ১ ব্লকে ২টি, মহিষাদলে ২টি, সুতাহাটায় ১টি, হলদিয়ায় ২টি, খেজুরি ১ ও ২ ব্লকে ২টি এবং নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লকে ২টি রাস্তা সংস্কার করা হবে।