চলছে প্রশিক্ষণ। —নিজস্ব চিত্র।
কেউ দু’পায়ে হাঁটতে পারেন না। আবার কেউ কথা বলতে পারেন না। কিন্তু তাঁরা কেউই জীবনযুদ্ধে হার মানতে রাজি নন। স্বনির্ভর হওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে চান হলদিয়া ব্লকের বাড়বাসুদেবপুরের মীরা, শঙ্কর, মৌমিতারা।
কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে প্রতিবন্ধী যুবক-যুবতীদের হাতেকলমে শেখানো হচ্ছে রুজিরুটি জোগাড়ের বিভিন্ন কাজকর্ম। চকদ্বীপা গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে নিয়মিত সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সেখানেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন শঙ্কর-মীরারা। বছর তিরিশের যুবক শঙ্কর মাইতি জন্মের পর থেকেই পায়ে সমস্যা। তিনি বর্তমানে টেলারিঙের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিবন্ধী বলে কেউ পাশে দাঁড়াননি। বেঁচে থাকার রসদ পেতে স্বাবলম্বী হতে হবে। তাই এখানে আসি।’’
অল্প বয়সে স্বামীকে হারিয়েছেন মীরা দাস। কথা বলতে পারেন না তিনি। তাই বলে হাল ছাড়েননি। আপাতত তিনিও সেলাই মেশিনে কাজ শেখার চেষ্টা করছেন মীরা। একই সমস্যায় ভুক্তভোগী মৌমিতা বেরা মোবাইল সারানোর কাজ শিখছেন। বেঁচে থাকার নতুন মন্ত্র পেয়ে আপ্লুত তাঁরা। আর শুধু মীরা, শঙ্করেরা নন, এমন আরও শতাধিক মানুষ এখন স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষিকা মিনু দাস পণ্ডা বলেন, ‘‘এঁদের পাশে দাঁড়াতে পেরে ভাল লাগছে। মৌমিতা, মীরাদের মতো মানুষদের কথা ভেবে সরকার এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তা প্রশংসনীয়।’’
এক মাস ব্যাপী ওই প্রশিক্ষণ শিবিরের মূল উদ্যোক্তা প্রতিবন্ধী রাজ্য সম্মিলনী। ওই সংগঠনের হলদিয়া শাখার তরফে পান্নালাল দাস এ দিন বলেন, ‘‘শুধু প্রশিক্ষণ দেওয়া নয়, ওঁরা যাতে কাজ শিখে স্বনির্ভর হতে পারেন সে জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।’’