পুরনির্বাচনের আগে দলে গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে যুযুধান নেতাদের নিয়ে বৈঠকে পাঁশকুড়া পুরসভার প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করল তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের বাড়িতে ওই বৈঠকে ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও। পাঁশকুড়া পুরসভার বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র, তৃণমূল যুব কংগ্রেস নেতা তথা বিদায়ী কাউন্সিলর আনিসুর রহমান ও জাইদুল খানদের নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করে শুভেন্দুবাবু ও সৌমেনাবু বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রার্থী বাছাই করেন। দলীয় সূত্রে খবর, ১৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে সর্বসম্মতভাবে ১৭টির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী কে হবেন তা এখনও ঠিক হয়নি। প্রার্থী তালিকায় বড়সড় রদবদলের মধ্যে রয়েছে বিদায়ী পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খানের বাদ পড়া। তবে জাকিউরের জায়গায় তাঁর ভাই জাইদুলের খানের স্ত্রী মঞ্জুরি খাতুন প্রার্থী হচ্ছেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডে।
বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র ফের প্রার্থী হচ্ছেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে আনিসুর রহমান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সেখ সমীরুদ্দিন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সহিদুর রহমান খান, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সুমনা মহাপাত্র (মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের স্ত্রী) ফের প্রার্থী হচ্ছেন। ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর নবকুমার ভট্টাচার্য এবার প্রার্থী ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী প্রাক্তন কাউন্সিলর মিতালি বর্মন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হচ্ছেন বিদায়ী কাউন্সিলর সুপর্ণা পাড়িয়ালের স্বামী ও প্রাক্তন কাউন্সিলর শ্যামল পাড়িয়াল। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর শঙ্কর মন্ত্রীকে বাদ দিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন কাউন্সিলর হরেন মাইতিকে। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী বিদায়ী কাউন্সিলর মঞ্জু দাসের স্বামী সুকুমার দাস। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হচ্ছেন বিদায়ী কাউন্সিলর আমজাদ আলির স্ত্রী। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিদায়ী কাউন্সিলর অনন্ত চাউলিয়ার বদলে এবার প্রার্থী দেবব্রত আচার্য। এছাড়াও প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া আমিনা বিবি। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মৌমিতা সেন, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে আশিকুর রহমান (আনিসুর রহমানের ভাই) ও নবগঠিত ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে সুকুমার ভূঁইয়াকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রার্থী তালিকায় স্থান পাওয়া নিয়ে স্থানীয় নেতাদের কোন্দল নেত্রীর কানে পৌঁছেছিল। কোন্দল এতটাই তীব্র ছিল যে দলীয়ভাবে প্রার্থী ঘোষণার আগে কয়েক’টি ওয়ার্ডে প্রার্থীদের নাম সহ দেওয়াল লিখনও শুরু হয়ে যায়। যা নেত্রী ভাল চোখে দেখেননি। কয়েকদিন আগেই জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী পাঁশকুড়ার নেতাদের ডেকে মতবিরোধ মিটিয়ে একসঙ্গে ভোট করার নির্দেশ দেন। এরপরেই বৃহস্পতিবার রাতে পাঁশকুড়ায় দলের নেতাদের নিয়ে পুরভোটের প্রার্থী ঠিক করতে বৈঠকে বসেন সৌমেনবাবু ও শুভেন্দুবাবু।
সৌমেনবাবু বলেন, ‘‘দলনেত্রীর নির্দেশ মেনেই বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে সর্বসম্মতভাবে ১৭টি ওয়ার্ডে প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি একটি ওয়ার্ডের প্রার্থীর নামও এক-দুদিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে।’’ প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়া নিয়ে বিদায়ী পুরপ্রধান জাকিঊর রহমান খান বলেন, ‘‘আমি দলের প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম এটা ঠিক। তবে দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা মেনে নিয়েছি।’’