মাঠ থেকেই চড়া দামে বিকোচ্ছে আলু। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
রেকর্ড দামে বিকোচ্ছে নতুন আলু। আলু ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা জানাচ্ছেন, অতীতে নাকি কখনও এত দামে বিক্রি হয়নি নতুন আলু। এখন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে নতুন আলুর পাইকারি বাজারদর প্রতি কুইন্টাল ১৫০০ থেকে ১৫৫০ টাকা। একটা সময় এই দর ১৬০০-১৭০০ টাকা পর্যন্তও পৌঁছে গিয়েছিল। বিক্ষিপ্ত ভাবে দাম ওঠানামা করলেও বেশ কয়েকদিন ধরে দাম ১৪০০-১৫০০ টাকার নীচে নামেনি। এই দামে মাঠ থেকে কবে আলু বিক্রি হয়েছিল, দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া আলু চাষিরাও মনে করতে পারছেন না। একই অভিজ্ঞতা ব্যবসায়ীদেরও।
আলুর এই রেকর্ড দামে শেষমেশ প্রতিকূলতা কাটিয়ে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। আলু বিক্রি করে ভাল দর পাচ্ছেন তাঁরা। আলুর ফলন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলেও আফশোস নেই চাষিদের। মাসখানেক আগে থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই মাঠ থেকে আলু তুলতে শুরু হয়েছিল। মরসুমের শুরুতে লাগানো আলু উঠছে এখন। দিনকয়েকের মধ্যেই অবশ্য পুরোদমে আলু তোলার কাজ শুরু হয়ে যাবে।
প্রথম দিকে নতুন আলুর দাম এতটা ছিল না। সেই সময় প্রতি কুইন্টালে আলুর দাম ছিল ৭০০ থেক ৮০০ টাকা। দিন কয়েকের মধ্যেই দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রতি বিঘা আলু চাষে খরচ পড়েছিল ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এখন এক বিঘা জমির আলু বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। মানে, প্রতি বিঘায় লাভ প্রায় ৪০ হাজার টাকা। চন্দ্রকোনার পারুলিয়ায় আলু চাষি কাশীনাথ মিশ্র, ঘাটালের খড়ারের নির্মল রায়েরা বলেন, “দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আলু চাষের সঙ্গে যুক্ত। মাঠ থেকে এই দামে কোনও দিন আলু বিক্রি করিনি।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বরুণ পণ্ডিত মানছেন, “হিমঘরে আলু ঢোকানোর সময় এমন দাম রেকর্ড।”
আলুর দামে এমন বাড়ল কেন?
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এ বার সরকারি সময়সীমার পরেও হিমঘরে পুরানো আলু মজুত ছিল। ফলে নতুন আলুর চাহিদা তেমন ছিল না। সেই আলু শেষ হতেই চড়চড়িয়ে দাম উঠছে নতুন আলু। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বরেন মণ্ডল বলেন, “এটা সুখবর। আলুতে দীর্ঘদিন পর চাষিরা লাভ পাচ্ছেন।”