বিএসএনএল পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় সমস্যায় পড়েছে শালবনি ব্লক প্রশাসন। কিছু সরকারি কাজকর্ম শিকেয় উঠছে। সমস্যা জানিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকে চিঠি দিয়েছেন শালবনির বিডিও জয়ন্ত বিশ্বাস। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শীঘ্রই বিএসএনএল কর্তাদের বৈঠকে ডাকা হতে পারে।
শালবনির বিডিও জয়ন্তবাবু বলেন, ‘‘সরকারি কাজকর্ম ব্রডব্যান্ড পরিষেবার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। বিকল্প হিসেবে যা ব্যবহার করা হয় তাতে প্রায় কাজই হতে চায় না। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই সমস্যা চলছে। মাঝেমধ্যেই ইন্টারনেট সংযোগ থাকছে না।’’ ইতিমধ্যে মেদিনীপুরের এসডিওটি বিলাস ঘোষের সঙ্গে কথা হয়েছে এসডিওর। কেন এই সমস্যা? বিলাসবাবু বলেন, ‘‘বজ্রপাতের ফলে সিস্টেম বসে গিয়েছিল। টাওয়ারগুলোয় কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে এখন সিস্টেম রিস্টোর করা হয়েছে।’’ বজ্রপাতের জেরে এমন সমস্যা এড়াতে কেন ‘লাইটিং প্রোটেক্টর’-এর ব্যবস্থা নেই? সদুত্তর নেই বিলাসবাবুর কাছে। তবে বিএসএনএলের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘প্রয়োজনীয় কিছু পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। পরিষেবার মান বাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।’’ অবশ্য শুধু শালবনিতে নয়, জেলার আরও কিছু ব্লকে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। ফলে, অসন্তুষ্টির পারদ চড়ছে।
অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই ইন্টারনেট সংযোগ উধাও হয়ে যাচ্ছে। কিছু সরকারি কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। একশো দিনের কাজ থেকে শুরু করে ইন্দিরা আবাস যোজনা, এখন বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজই নেট-নির্ভর হয়ে গিয়েছে। যাবতীয় তথ্য নেটে আপলোড করতে হয়। প্রতিদিনের কাজের অগ্রগতির হিসেবও নেটে আপলোড হয়। মাস্টার রোলও হয় নেটে। ইন্টারনেট পরিবেষা ব্যাহত হলে সমস্যায় পড়েন ব্লক প্রশাসনের কর্তা-কর্মীরা। পরিষেবা না পেয়ে নাকাল হচ্ছেন মানুষ। ল্যান্ডলাইনের ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শালবনি ব্লকের এক সরকারি কর্মীর কথায়, ‘‘বেশ কয়েক সপ্তাহ হল নেট সংযোগ থাকছে না। থাকলেও তা অনিয়মিত। বিএসএনএল থেকে বলা হচ্ছে, বজ্রপাতের সময় এমন সমস্যা হবেই। কেন ‘লাইটিং প্রোটেক্টর’ না রেখে লাইন বন্ধ করে দেওয়া হবে? বিকল্প ভাবা উচিত।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের সূচনা করেছেন। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে এ রাজ্যের আড়াই হাজারের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত। এই পরিস্থিতিতে কেন পরিষেবার মান উন্নত হবে না, কেন ল্যান্ডলাইন-ইন্টারনেট পরিষেবা না পেয়ে নাকাল হতে হবে, ব্যাহত হবে সরকারি কাজ, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্তও বলেন, ‘‘যখন-তখন নেট স্লো হলে সমস্যা হয়। ইন্টারনেটে লিঙ্ক না থাকলে কাজকর্ম ব্যাহত হয়।’’ মেদিনীপুরের এসডিওটি বিলাসবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘শালবনির সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে। বজ্রপাতে বোর্ড পুড়ে গিয়েছিল। তা মেরামত করা হয়েছে।’’ বিএসএনএলের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড পরিষেবা পৌঁছতে এ বার অপটিক্যাল ফাইবার কেবল্ বসানো হবে। কিছু টুজি- থ্রিজি টাওয়ার বসানোর ভাবনা রয়েছে।’’