প্রতীকী ছবি
লকডাউনের মাঝেই রাতের পর রাত ইটভাটায় জোরদার কাজ। সেখানে দুর্ঘটনায় এক শ্রমিকের মৃত্যু হওয়ায় সামনে এসেছে নিষেধ না মেনে কাজ করানোর ঘটনা।
গুরুতর আহত হয়েছেন আরও এক শ্রমিক।হলদিয়ার ঝিকুরখালি এলাকার ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শ্রমিকের নাম সঞ্জয় মাঝি (৪০)। তিনি আদতে বিহারের বাসিন্দা। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ওই ইটভাটাতেই থাকতেন তিনি।
হলদিয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সালুকখালি এলাকায় হুগলি নদীর তীরে ওই ইটভাটায় বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা নাগাদ ইট তৈরির সময় দুর্ঘটনা ঘটে। ভাটার এক কর্মী জানান। পাকা ইট সারি করে রাখা ছিল। কাঁচা ইট ট্রলি করে তার পাশ দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল সঞ্জয়। অন্ধকারে কিছু প্রায় দেখা যাচ্ছিল না। ধাক্কা লাগায় সার দিয়ে রাখা পাকা ইট সঞ্জয়ের উপরে পড়ে যায়। তড়িঘড়ি তাঁকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে সঞ্জয়কে মৃত ঘোষণা করা হয়। আরেকজন শ্রমিক জখম হয়ে হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষ জোর করে কাজ করাচ্ছেন। কাজ না করলে খেতে পাবে না, এমন ভয় দেখিয়ে তাঁদের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের করতে হচ্ছে। লকডাউন থাকায় দিনের বেলায় কাজ করালে জানাজানির ভয় পাচ্ছে মালিকপক্ষ।তাই রাতের অন্ধকারে তাঁদের কাজ করানো হচ্ছে। যার ফলে মারা গেল এক শ্রমিক।
ওই ইটভাটায় কাজ করেন প্রায় ২০০ শ্রমিক। তাঁরা প্রত্যেকেই ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা। লকডাউনের ফলে নিজেদের বাড়ি ফিরতে পারেননি তাঁরা। থেকে গিয়েছেন ভাটাতেই। কিন্তু এমনি এমনি শ্রমিকদের খাওয়াতে রাজি ছিল না মালিকপক্ষ। সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল শ্রমিকরা। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা কাজ করছিলেন বলে জানান শ্রমিকেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত শ্রমিকের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। তার ভিত্তিতে ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে ঘটনা সম্পর্কে মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। মালিকের ফোন বন্ধ ছিল।
স্থানীয় কাউন্সিলর ভক্তিপ্রসাদ বলিদা বলেন, ‘‘লকডাউন ভেঙে কাজ হচ্ছিল ওই ভাটায়। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমি গাড়ির ব্যবস্থা পরে দু’জনকে হাসপাতালে পাঠাই। মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে মৃতের ও আহতের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।’’