প্রতীকী ছবি।
ফের উত্তপ্ত কেলেঘাই নদী সংলগ্ন পটাশপুরের সীমানা এলাকা। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থেকে দুষ্কৃতীরা কেলেঘাই নদী পেরিয়ে এসে রাতভর বোমাবাজি করলো পটাশপুরে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে অশান্তিতে ভীত সন্ত্রস্ত এলাকার মানুষ।
পটাশপুর-১ ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটা বড় অংশই কেলেঘাই নদী সংলগ্ন এলাকা। নদীর উল্টোদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং। কয়েক দশক ধরে নদীপথে বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে পটাশপুর ও সবং এলাকায় মানুষ যাতায়াত করছেন। কংগ্রেস কিংবা তৃণমূলের আমলে সবং বরাবরই মানস ভুঁইয়ার ‘গড়’ হিসেবে পরিচিত। বুধবার তৃণমূলের সেই গড়ে সবংয়ে সভা করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। নদীর এপারে পটাশপুরের গোপালপুর অঞ্চলে বিজেপি সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী। শুভেন্দুর সভার আগে সবং-এ বেশ কিছু বাড়িতে বোমাবাজি ও ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এ বার রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে সবং থেকে নদী পেরিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পটাশপুরে বোমাবাজি করছে বলে অভিযোগ উঠল। অভিযোগ গোকুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে তেঁতুলিয়া খেয়াঘাট হয়ে দুষ্কৃতীরা নদী পেরিয়ে এসে বুধবার রাতভর মাধবচক, তেঁতুলিয়ায় বোমাবাজি করে। রাতে খেয়াঘাটে নিরাপত্তা না থাকার গত কয়েকদিন ধরে সবং এলাকার দুষ্কৃতীরা পটাশপুরে অনায়াসে ঢুকে পড়ছে এবং বিজেপি অধ্যুষিত নদী সংলগ্ন গ্রামগুলিকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে ফের নদী পথে পালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত বছর কেলেঘাই নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপির লড়াইয়ে উত্তেজনা তৈরি হয় গোপালপুরে। অভিযোগ তখনও সবং থেকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পটাশপুরে ঢুকে বোমাবাজি করে। গত শনিবার রাতে পটাশপুরে নদীবাঁধ লাগোয়া সিংলাই মোড়ে তৃণমূল ও বিজেপির সংঘর্ষে এক বিজেপি সমর্থকের বৃদ্ধ বাবার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নদীপথে ফের দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, পটাশপুর তৃণমূল নেতৃত্বের মদতে সবং থেকে দুষ্কৃতীরা এসে এলাকায় বোমাবাজি করে সন্ত্রাস তৈরি করছে। পুলিশ-প্রশাসনকে এলাকার মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। সন্ত্রাসের প্রতিবাদে গোপালপুরে মিছিলও করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। পটাশপুর-১ ব্লকের বিজেপি নেতা শঙ্কর প্রসাদ ভঞ্জ বলেন, ‘‘পটাশপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব নদীপথে সবং থেকে দুষ্কৃতীদের এলাকায় আমদানি করছে। দুষ্কৃতীদের দিয়ে সন্ত্রাস করে ক্ষমতা দখলের মিথ্যে চেষ্টা করছে। রাতে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার ছক কষছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। অবিলম্বে পুলিশকে এলাকার মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।’’
তাদের বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ উড়িয়ে পটাশপুর-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি পীযূষ পন্ডা বলেন, ‘‘আমাদের দল কখনও সন্ত্রাসের রাজনীতি করে না। বিজেপি বাইরে থেকে দুষ্কৃতী এনে বোমাবাজি করছে। পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি।’’ পটাশপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় বোমাবাজির ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। কোথা থেকে দুষ্কৃতীরা এসেছে সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য নেই। নিরাপত্তার জন্য রাতে টহলদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।