নিষেধ রয়েছে প্রশাসনের। তারপরেও রবিবার বড়দিনে রূপনারায়ণ নদে দেখা গেল এই ছবি। নিজস্ব চিত্র
করোনা পরিস্থিতির জেরে গত দু’বছর বড়দিন ও ইংরাজি নববর্ষে ভিড় তেমন জমেনি। এবার বড়দিনে বনভোজনের জন্য ভিড় জমল তমলুক শহরের স্টিমারঘাট, দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের ধলহরা, খারুই এবং জামিত্যা এলাকায় রূপনারায়ণ নদের তীরে। ভিড় জমেছিল নন্দকুমারের নরঘাটে হলদি নদী ও টেংরাখালিতে কেলেঘাই নদীর তীরে। নদীতে নৌকাবিহারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পুলিশের টহলদারির মধ্যেই এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে নজরদারি।
২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে কোলাঘাটের কাছে পিকনিক করতে এসে রূপনারায়ণে নৌকাডুবিতে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। তার জেরে রূপনারায়ণে নৌকাবিহার কিংবা নৌকায় চেপে পিকনিক নিষিদ্ধ থাকলেও কোলাঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই-১ পঞ্চায়েতের জামিত্যা গ্রামে পিকনিক দলের লোকজনের রূপনারায়ণের বুকে নৌকা বিহারের ছবি দেখা গেল রবিবার, বড়দিনে। এলাকায় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও কিছু লোকজন রূপনারায়ণে নৌকায় চেপে হই-হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন বলে অভিযোগ। খারুই -১ পঞ্চায়েত প্রধান শেখ সেরাজুলের দাবি, ‘‘আমাদের এলাকার কোনও নৌকা পিকনিক দলের লোকজনের জন্য ব্যবহার করা হয়নি। এবিষয়ে আমরা আগাম ব্যবস্থা নিয়েছি। বাইরে থেকে পিকনিক দলের লোকজন নৌকা নিয়ে এসে এমন করতে পারে।’’
তমলুক থানার পুলিশ জানিয়েছে, জামিত্যা, সোয়াদিঘি এলাকায় অনেক পিকনিক দল এসেছিল। ওখানে পুলিশের নজরদারি ছিল। নৌকায় চেপে পিকনিক করার ঘটনা নজরে আসেনি। তবে অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এদিন সকাল থেকেই তমলুকের স্টিমার ঘাট এলাকায় রূপনারায়ণের তীরে পিকনিক দলের আনাগোনা শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে ভিড় বাড়তে থাকে। অনেক পরিবারের সদস্যরা দল বেঁধে এসেছেন পিকনিকে। বসে যায় দোকানপাটও। রূপনারায়ণের তীরে রীতিমত জমজমাট মেলার ছবি দেখা গিয়েছে। স্টিমারঘাট এলাকায় রূপনারায়ণের তীরে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করে শুরু হয়ে রান্না। সকলেই মেতে ওঠেন গানে, নাচে। তবে মাইক বা সাউন্ড বক্সের উপদ্রব তেমন ছিল না। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গিয়েছে। সপরিবার পিকনিকে এসেছিলেন তমলুকের শ্রীরামপুর এলাকার অনুপম মাইতি। অনুপম বলেন, ‘‘করোনার আগে কয়েক বছর ধরে এখানে সবাই মিলে আসতাম। কিন্তু গত দু’বছর আসা হয়নি। এবছর ফের এসেছি। খুব ভাল লেগেছে।’’
তমলুক শহরের পাশাপাশি এদিন নন্দকুমার ব্লকের টোটাবেড়িয়া, ইচ্ছাপুর ও মীরপুর এলাকায় দনিপুরের কাছে রূপনারায়ণ তীরে বেশ কিছু পিকনিক দলের ভিড় ছিল। নন্দকুমারের নরঘাটের কাছে মাতঙ্গিনী সেতু সংলগ্ন হলদি নদীর তীরে পিকনিক করতে ভিড় জমান অনেক মানুষ। মাইকের উপদ্রব ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগের কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর পিকনিক দলের লোকজনের আনাগোনা কিছুটা কম।