প্রতীকী ছবি।
গ্যাসের দোকানে গিয়ে বা মোবাইলে সিলিন্ডার বুক করে অপেক্ষায় থাকতে হবে না। বদলে পকেট থেকে কড়ি ফেললেই সিলিন্ডার হাজির দোরদোড়ায়। কারণ বাজারে দেদার বিকোচ্ছে গৃহস্থের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ রান্নার গ্যাস। চড়া দামে তা ফড়েদের হাত ঘুরে পৌঁছে যাচ্ছে হোটেল, রেঁস্তরাতে। প্রশাসনিক উদাসীনতায় গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার নিয়ে কালোবাজারি চলছে প্রায় গোটা কাঁথি শহর জুড়ে। যা নিয়ে অভিযোগের পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রাহকেরা।
কাঁথি শহর ঘুরলেই চোখে পড়বে যত্রতত্র রাস্তার পাশে ফুটপাতের ধারে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে ছোটখাট রেঁস্তরা থেকে খাবারের দোকান। এ ছাড়া বড় এবং মাঝারি ধরনের একাধিক হোটেল তো রয়েছেই। অভিযোগ, ওই সব হোটেলে এবং রেঁস্তরায় অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার। শহরের এক শ্রেণির মানুষ এ ধরনের গ্যাস সিলিন্ডার বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে মজুত করে রাখছে এবং তা চড়া দামে বিভিন্ন হোটেল এবং রেঁস্তরায় বিক্রি করছে। বাণিজ্যিক কারণে হোটেল এবং রেঁস্তরায় কমার্শিয়াল সিলিন্ডার ব্যবহার নিয়ম।যার দাম রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের চেয়ে অনেকটাই বেশি।ফলে বহু হোটেল এবং রেঁস্তরার মালিক তুলনায় কম দামে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার কিনছেন কালোবাজারে।
আঠিলাগড়ি এলাকার বেশ কয়েকজন মহিলা জানান, ক্যানাল পাড়, কুমারপুর এলাকায় কয়েকজন ফড়ে গ্যাসের বই সংগ্রহ করে রেখেছে। তারাই সারা বছর ধরে ওই গ্যাসের বই থেকে গ্যাস সিলিন্ডার কিনে নেয়। গ্রাহকদের প্রয়োজনে ওই ফড়েরাই প্রকৃত মালিকের বাড়িতে সিলিন্ডার পৌঁছে দেয়। শহরের খড়গপুর বাইপাস এলাকায় এক রেঁস্তরা মালিক বলেন, ‘‘গৃহস্থের রান্নার গ্যালের এমনিতে সিলিন্ডার পিছু ৬০০ টাকা দাম। বাণিজ্যিক গ্যাস সিলিন্ডারের দাম তুলনায় অনেক বেশি। তাই অপেক্ষাকৃত সস্তার ওই গ্যাস সিলিন্ডার ৮০০-৯০০ টাকা দিয়ে কিনে কাজ চালাতে হয়।’’
তবে, সুযোগ বুঝে ওই সব গ্যাস সিলিন্ডারের দাম এক হাজার টাকা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে ফড়েদের বিরুদ্ধে। শহরে বেশ কিছু বাড়িতে ওই সব রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার অধিক সংখ্যায় মজুত রাখা হয় স্থানীয়দের অভিযোগ। রান্নার জন্য ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার বাণিজ্যিক স্বার্থে হোটেল এবং রেঁস্তরাগুলিতে ব্যবহার বেআইনি। তা সত্ত্বেও কী ভাবে এমন কালোবাজারি চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(গ্রামীণ)অরবিন্দ কুমার আনন্দর প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস-এরও উত্তর দেননি। যদিও কাঁথি থানার এক পুলিশ কর্তা, ‘‘বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’
কাঁথির মহকুমা শাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কালোবাজারির অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে। প্রয়োজনে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’