শুভেন্দু অধিকারী
তবে কি শুভেন্দু অধিকারীর দেখানো পথেই রেলশহরের গড় আগলাতে চাইছে বিজেপি! উপ-নির্বাচনের মুখে গেরুয়া শিবিরের কিছু সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
রেলশহরে ভাঙাচোরা দলের অবস্থা মেরামতে দলের তরফে পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু আগেই ওয়ার্ডস্তরে দলীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছেন। তৃণমূলের সেই পর্যবেক্ষকেরা ওয়ার্ডে গিয়ে দলের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করছেন। এই পর্যবেক্ষকেরা কেউ খড়্গপুরের নন, জেলার অন্য এলাকার বাসিন্দা।
এ বার বিজেপিও খড়্গপুরে স্থানীয়স্তরে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে চলেছে। পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে দলের শক্তিকেন্দ্রস্তরে। সাধারণত একটি ওয়ার্ডে দলের দু’টি শক্তিকেন্দ্র থাকে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিজেপির ক্ষেত্রেও পর্যবেক্ষকেরা কেউ খড়্গপুরের লোক হবেন না, আসবেন বাইরে থেকে।
নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে শনিবার খড়্গপুরে বিজেপির এক বৈঠক হয়েছে। সেখানে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। দলের মণ্ডলস্তরেও পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। খড়্গপুরে তিনটি মণ্ডল রয়েছে— উত্তর, দক্ষিণ এবং মধ্য। উত্তর মণ্ডলের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে শুভজিৎ রায়কে। শুভজিৎ দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক। দক্ষিণ মন্ডলের পর্যবেক্ষক মদন রুইদাস। মদন দলের জেলা সম্পাদক। মধ্য মণ্ডলের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে অরূপ দাসকে। অরূপও দলের জেলা সম্পাদক। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘শক্তিকেন্দ্রস্তরে ইনচার্জ থাকবেন। তাঁরা সাংগঠনিক কাজকর্মের উপর নজর রাখবেন।’’ শমিত মানছেন, ‘‘দলের জেলা নেতাদেরই দায়িত্ব দেওয়া হবে।’’
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খাসতালুক খড়্গপুরে ভোটের মুখে নাজেহাল দশা গেরুয়া শিবিরে। প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝা-কে নিয়ে দলের অনেকেই খুশি নন। পুরনো কর্মী প্রদীপ পট্টনায়েক নির্দল হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। শনিবার শহরে আসার কথা ছিল শীর্ষ নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের। তবে দুর্যোগে তাঁর আসা হয়নি। শনিবার বিজেপির বৈঠকে ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা, মধ্যপ্রদেশের হুকুমচাঁদ গুপ্ত। তিনি দলের বিস্তারক হয়ে খড়্গপুরে এসেছেন। খড়্গপুরে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল নতুন নয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে সেই কোন্দল দূরে রেখে সকলকে নিয়ে চলার জন্যই শক্তিকেন্দ্রস্তরে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে চলেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সম্মতিও রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
এই অবস্থায় শুভেন্দু মডেল মেনে বিজেপি বাইরের লোককে ভোটের দায়িত্ব দেওয়ায় বিঁধতে ছাড়ছে না তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি তৃণমূলকে অনুসরণ করার চেষ্টা করছে। কিছু লাভ হবে না!’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিতের দাবি, ‘‘বিজেপি কাউকে অনুসরণ করছে না। খড়্গপুরে আমাদের মজবুত সংগঠন রয়েছে। তা আরও মজবুত করার চেষ্টা চলছে।’’