নন্দীগ্রামে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
যে জমি আন্দোলনকে হাতিয়ার করে রাজ্য রাজনীতিতে দাগ কেটেছিলেন, সেই নন্দীগ্রামেই পুড়ল মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল। তাঁর দলের নেতাদের বিরুদ্ধে আমপান ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য দিতে দুর্নীতি-সহ নানা অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন আমদাবাদ-বিরুলিয়া সংযোগকারী বিরুলিয়া ব্রিজে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বিজেপি প্রায় শ’পাঁচেক কর্মী-সমর্থক। যেমনটা দেখা গিয়েছিল ২০০৭-২০০৮ সালে নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলন পর্বে।
এ দিলন ঘণ্টা দেড়েক ধরে চলে বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তৃণমূলের স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা রেশন কার্ড নিয়ে দুর্নীতি করছেন। এছাড়া, তৃণমূল নেতারা আমপানের ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরিতে স্বজনপোষণ নীতি, ১০০ দিনের কাজে দেদার দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ। বিজেপি’র জেলা (তমলুক) জেলা সহ সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘তৃণমূলকে সবাই কাটমানির সরকার বলে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাই বিক্ষোভের রাস্তা বেছে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।’’
দুর্নীতির যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটিতে তৃণমূলের চেয়ারম্যান মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘আমপানে ক্ষতিপূরণের তালিকা নিয়ে কিছু মানুষের ক্ষোভ রয়েছে জানি। খুব তাড়াতাড়ি আমরা ওই ক্ষোভ মিটিয়ে দেব।’’
অন্যদিকে, এ দিনই বিজেপি’র স্মারকলিপি কর্মসূচিতে তৃণমূলের সঙ্গে গোলমাল বাধে তমলুকের উত্তর সোনামুই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের চত্বরে। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে দুর্নীতির অভিযোগে এ দিন বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভ-স্মারকলিপি জমা দেওয়া কর্মসূচি নিয়েছিল।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা সকালে পঞ্চায়েত অফিসে যাওয়ার আগেই তৃণমূলের প্রায় ২০০ জন কর্মী-সমর্থক সেখানে জমায়েত হন। বিজেপির লোকজন পৌঁছানোর পরে তমলুক থানার পুলিশও সেখানে যায়।
বিজেপি’র অভিযোগ, পুলিশের সামনেই তৃণমূলের কর্মীরা বিজেপি কর্মীদের হুমকি দিতে শুরু করে। পরে তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপর আক্রমণও চালায়। এতে দু’জন বিজেপি কর্মী আহত হন বলে দাবি। কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকা বিজেপি নেতা আশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘পুলিশের সামনেই তৃণমূলের লোকজন আমাদের সমর্থকদের মারধর করেছে। কারচুপি ঢাকতে পরিকল্পিতাবে এটা করা হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদে রয়েছেন কাজল বেরা। তিনি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা স্ত্রী। সোমনাথ বলেন, ‘‘বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকেররা আমার এবং পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে নানা ব্যক্তিগত কুৎসা করছিলেন। সে সময় পঞ্চায়েত অফিসে যাওয়া আমাদের কর্মী-সমর্থকরা তার প্রতিবাদ করেছেন। মারধরের
অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’