মেদিনীপুরের পথে বিজেপি-র মহামিছিল। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
‘আমরা কারা’? ‘নাগরিক’। স্লোগান শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের মিটিং, মিছিলে। স্লোগান বেঁধে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। এ বার পাল্টা স্লোগান শোনা গেল বিজেপির মিটিং, মিছিলে— ‘মানব না কো অনুপ্রবেশ’।
নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে শুক্রবার মেদিনীপুরে মহামিছিল করেছে বিজেপি। মিছিল শেষে সভায় দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি স্লোগান দিচ্ছি। আপনারা সবাই মিলে গলা মেলাবেন। আমি বলব, আমার মাটি আমার দেশ। আপনারা বলবেন, মানব না কো অনুপ্রবেশ।’’ প্রথম স্লোগানের জোর তত বেশি ছিল না। সায়ন্তনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আরও জোরে স্লোগান দিন, দিদিমণির কানে পৌঁছে যাওয়া চাই।’’
মহামিছিলে ভালই জমায়েত হয়েছিল। মিছিলের মাথাটা যখন এলআইসি মোড়ে, লেজটা তখন ছিল পোস্ট অফিস রোডে। ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনের দাবি, ‘‘বিপ্লবীর শহর মেদিনীপুর। বিপ্লবের জায়গা মেদিনীপুর। এত বড় মিছিল মেদিনীপুরের মানুষ দেখেননি।’’ এ দিন দুপুরে মিছিল শুরু হয় অরবিন্দনগরের মাঠ থেকে। কেরানিতলা, বটতলাচক, গোলকুয়াচক হয়ে মিছিল পৌঁছয় এলআইসি মোড়ে। মিছিলে ছিলেন তারকা- নেত্রী রিমঝিম মিত্র, দলের রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি শমিত দাশ প্রমুখ।
সভায় সায়ন্তন বলেন, ‘‘উনি (মুখ্যমন্ত্রী) বলেছেন, উনি জীবিত থাকতে এখানে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিতে দেবেন না। লিখে রেখে দিন, দিদিমণি বেঁচে থাকবেন, ভাল থাকবেন, খেলা-মেলা-উৎসবে থাকবেন। দেখবেন, আমরা এই আইন বাংলায় কার্যকর করবই। আমরা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেব। উনি আটকাতে পারবেন না। বাংলাদেশের মুসলমানদের তাড়িয়ে দেব। এখানকার মুসলমানদের চিন্তা নেই। তাঁরা ভারতের নাগরিক। তাঁরা এখানেই থাকবেন।’’ এরপরই নৈহাটির বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ টেনে সায়ন্তন বলেন, ‘‘নৈহাটিতে বাজি ফাটল। নদীর ওপারে চুঁচুড়ায় বাড়ির কাচ ভাঙল। কীসের বাজি ওটা? ওটা বাজি নয়, ওটাকে বোমা বলে।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধে সায়ন্তন বলেন, ‘‘জেহাদিরা যেদিন কালীঘাটে বোমা ফাটাবে, সেদিন দিদি বুঝবেন এই বোমার জোর কতটা।’’
এ দিন গাঁধীমূর্তির সামনে গিয়েই বিজেপির মিছিল গিয়েছে। নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় শুক্রবার এখানে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছে মহিলা কংগ্রেস। বিজেপির মিছিল যখন যায়, কংগ্রেসের কয়েকজন মহিলা নেতাকর্মী তখন অবস্থান মঞ্চেই বসেছিলেন। সভায় ওই অবস্থানকে কটাক্ষ করেন সায়ন্তন।
তৃণমূল অবশ্য বিজেপির মিছিল নিয়ে এতটুকুও চিন্তিত নয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, ‘‘পর্বতের মূষিক প্রসব। ওরা বলেছিল, মহামিছিল করবে। হাজার দুয়েক মানুষের মিছিল করেছে। শূন্য কলসির আওয়াজ বেশি।’’ শীঘ্রই মেদিনীপুরে মহামিছিল করবে তৃণমূল।