সোজা মন্দিরে ঢুকে তবে রক্ষা! ফাইল চিত্র।
পুলিশ নেই তো! চারিদিক দেখে দে ছুট। হাঁফ ধরলেও থামার উপায় নেই। সোজা মন্দিরে ঢুকে তবে রক্ষা।
ছুটছিলেন অনেকেই। তার মধ্যে একজনের দৌড়ই নজর কাড়ল। বাকিরা....। শুক্রবার বিকেলে তমলুক শহরে এমন দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। ব্যাপারটা কী। কোনও দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হল নাকি। নাকি সান্ধ্যকালীন শরীরচর্চা! ভুল ভাঙল অচিরেই। দৌড়চ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে ময়নার বিধায়ক অশোক ডিন্ডা ও আরও অনেকে। বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার অশোকের দৌড় ছিল অনায়াস। হাঁফিয়ে একশেষ হলেন বাকিরা।
আসলে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মতো এ দিন বিকেল ৫টায় শেষ হয়েছে পুরভোটের প্রচার। একে বারে অন্তিম লগ্নে বিকেল ৩টায় তমলুকের নিমতলা মোড় থেকে শুরু করে শুভেন্দু-সহ বিজেপি নেতাদের মিছিল বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ফের নিমতলায় আসার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের কিছুটা দেরিতে সাড়ে ৩টের দিকে শুরু হয় বিজেপির ওই মিছিল। তাতে শুভেন্দু ছাড়াও তমলুকের সমস্ত প্রার্থী, ময়নার বিধায়ক অশোক, হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল ও দলের জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সম্পাদক নবারুণ নায়েক ছিলেন।
গেরুয়া শিবিরের ওই মিছিল হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক ধরে হাসপাতাল মোড়, মানিকতলা মোড় হয়ে জেলখানার মোড়ের কাছে পৌঁছতেই বিকাল ৫টা বেজে যায়। এদিকে, সেখান থেকে নিমতলা মোড়ে ফিরতে আরও দু’কিলোমিটার পথ যেতে হত শুভেন্দুদের। সময় সীমা শেষ হওয়ার পরেও মিছিল করলে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করার দায়ে পুলিশ পদেক্ষেপ করার আশঙ্কায় হঠাৎই ছুটতে শুরু করেন শুভেন্দু। তাঁকে দেখে অশোক ডিন্ডা-সহ অন্য নেতৃত্ব ছোটা শুরু করেন। শেষে প্রায় দৌড়তে দৌড়তে জেলখানা মোড়ের অদূরে মহাপ্রভু মন্দিরে ঢুকে যান শুভেন্দু। সেখানে প্রার্থনা করে বর্গভিমা মন্দিরে পুজো দিয়ে শহর ছাড়েন তিনি।
দৌড়ে মন্দিরে ঢোকার আগে অবশ্য শুভেন্দু ছিলেন অনর্গল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা ঠিক করেছি ভোট দিতে না দিলেই প্রতিরোধ করব। তমলুক, কাঁথি, এগরায় ভোট লুট করলে কাঠের গুড়ি ফেলা হবে রাস্তায়। আবার নন্দীগ্রাম হবে।’’ সকালে শুভেন্দু নিজের খাসতালুক কাঁথিতে প্রচার সারেন। কাঁথির ক্যানাল পাড় থেকে মিছিল করেন বিজেপি কর্মীরা। সেটি শহর পরিক্রমা করে জুনপুট বাসস্ট্যান্ডে মোড় এলাকায় যায়। ইউক্রেনে আটকে থাকা বাঙালিদের ফেরত আনা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, ‘‘ইউক্রেন থেকে বাঙালিদের দেশে ফেরানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনার কোনও কারণ নেই। যেভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদিজী আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ এবং জৈনদের দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন, একই ভাবে ইউক্রেন থেকেও ফেরাবেন।’’ ছাত্র নেতা আনিস খান হত্যা কাণ্ডে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘শুক্রবার আনিসের দাদা সাজিদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সিবিআই তদন্ত চেয়ে তারা সুপ্রিম কোর্টে যাবে। আমি সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’’
এ দিন এগরায় শেষ বেলার প্রচারে বিজেপির বড় মিছিল বা সভা হয়নি। এ দিন বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি শেষ মুহুর্তে বাতিল হয়ে যায়। তবে দলীয় প্রার্থীরা ওয়ার্ডে ঘুরে ভোট প্রচার করেন। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী অনিতা দাস মিছিল করেন। ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বিশ্বজ্যোতি মাইতি পাড়ায় ইভিএম মেশিনের নমুনা নিয়ে পদ্ম প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য সকলের কাছে আর্জি জানান।