প্রতীকী ছবি।
লক্ষ্য ২০২১। বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন স্তরে দলের রাজনৈতিক সংগঠন আরও মজবুত ও সক্রিয় করার প্রস্তুতি শুরু করেছে বিজেপি। সেই পথে পা বাড়িয়ে এ বার দলের শ্রমিক সংগঠনকেও জেলায় মজবুত করার লক্ষ্যে নেমেছে। ইতিমধ্যে সেই কাজও শুরু করে দিয়েছে বিজেপি সমর্থিত ভারতীয় মজদুর সংঘ (বিএমএস)।
জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে দিঘায় কর্মী, হকার-দোকানদার থেকে টোটো চালক—বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন বিএমএস নেতৃত্ব। বিএমএস সূত্রে খবর, পর্যটন শহর হওয়ার সুবাদে দিঘার সমস্ত হোটেলের কর্মচারীদের নিজেদের সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে তারা। একই সঙ্গে সৈকত শহরে হকার পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রচুর মানুষ। এছাড়াও টোটো এবং অটোচালকদেরও সংগঠনের মধ্যে আনতে চলেছে তারা। বুধবার রাতে দিঘায় ওই বৈঠকে ওই সব সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বিএমএস সূত্রে দাবি করা হয়েছে, চারটি কারখানায় তাদের শ্রমিক সংগঠনের নথিভুক্তির জন্য শ্রম দফতরে আবেদন জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, অতীতে শুধুমাত্র হলদিয়া বন্দরে বিজেপি-র শ্রমিক সংগঠন ছিল। ইদানীং শিল্পশহরে কুড়িটি কারখানায় সংগঠন বিস্তারে মরিয়া বিএমএস নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের কয়েকটি কারখানায় তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র নেতা-কর্মীরা বিএমএসে যোগদান করেছেন। এরপরই ওই সব কারখানায় নিজেদের শ্রমিক সংগঠন তৈরির জন্য শ্রম দফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিএমএস নেতৃত্ব। একই সঙ্গে পাঁশকুড়ার ভোগপুরে বিড়ি শ্রমিকদের জন্যও সংগঠন তৈরি করে ফেলেছে তারা।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটে রাজ্যে ২৩টি আসনে জয়লাভের জন্য রাজ্য বিজেপিকে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু তাঁদের সেই আশা পূরণ হয়নি। বদলে ১৮টি আসন পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। এরপর রাজ্য নেতৃত্বকে এ রাজ্যে সংগঠন আরও বাড়ানোর জন্য নির্দেশ দেন অমিত শাহ। তাই বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে এখন থেকেই তৃণমূলের গড় পূর্ব মেদিনীপুরে শ্রমিক সংগঠনের শক্তি বাড়ানোর জন্য আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছে বিজেপি। আর এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিএমএসকে। এ ব্যাপারে বিএমএস-এর জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ কুমার বিজলির দাবি, ‘‘আগামী তিন মাসের মধ্যে গোটা জেলায় সর্বস্তরের শ্রমিক সংগঠনের শাখাগুলির বিস্তারে কাজে নেমে পড়েছেন কর্মীরা। যে ভাবে সাড়া মিলছে, তাতে আমাদের শ্রমিক সংগঠনের ভীত অনেকটাই মজবুত হবে।’’
যদিও বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধির এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক দল। তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জেলা কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকারের দাবি, ‘‘গোটা জেলা জুড়ে আমাদের শ্রমিক সংগঠনের শক্তি অক্ষত। সর্বক্ষণ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তাই আগামী দিনে বিজেপির মোকাবিলা আমরা শ্রমিক সংগঠন দিয়েই করব।’’