—প্রতীকী চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী ‘মোদী’জিকে জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্র তুলে দিতে দৃঢ় সংকল্প বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে শুভেন্দু-তালুক কাঁথিতেই এখনও ৩০০টির কাছাকাছি বুথে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই বিজেপির।
শিয়রে লোকসভা ভোট। প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মাঠে নেমে পড়েছে সব রাজনৈতিক দল। শনিবার বিজেপির জেলা কমিটির একটি বৈঠক হয়। সেখানে উঠে আসে কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বুথগুলির স্পষ্ট চিত্র। দেখা গিয়েছে, মূলত সংখ্যালঘু এবং হিংসা কবলিত এলাকাগুলিতে বিজেপির কোনও বুথ কমিটি তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তাই বুথ স্বশক্তিকরণ কর্মসূচিতে প্রতিটি বুথে ৩০ জনের বেশি কার্যকরী সদস্যকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করার বার্তা দেওয়া হয়েচে। আর তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গৃহ সম্পর্ক অভিযান চালাবে।
বিজেপি সূত্রের খবর, কাঁথি লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভায় ১,৮৫৬টির কাছাকাছি বুথ রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জন সদস্য রয়েছে, এমন বুথের সংখ্যা ১,৩৫৩টি। প্রায় ৫০০টির কাছাকাছি বুথে ৩০ জনের কম সদস্য রয়েছেন। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির একাংশ সূত্রের খবর, ১৬০০টিরও বেশি বুথে মাত্র ১০ থেকে ২০ জন সদস্য রয়েছেন। সেগুলিতে বুথ কমিটি তৈরিতে সমস্যা দেখা গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির জেলা কমিটির কয়েকজন নেতা বলছেন, ‘‘সংখ্যালঘু এবং হিংসা কবলিত এলাকাগুলিতে পূর্ণাঙ্গ বুথ কমিটি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী বুথের কোনও নেতাকে ওই বুথের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। যাতে তাঁরা গৃহ সম্পর্ক অভিযান চালিয়ে
যেতে পারেন।’’
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বাংলায় ৩৫টি আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইতিপূর্বে একাধিকবার শুভেন্দুও ঘোষণা করেছেন কাঁথি এবং তমলুক উপহার হিসেবে তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এর পরেও সব বুথে পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি না হওয়ায় গেরুয়া শিবিরের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপির এই সাংগঠনিক দুর্বলতাকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলছেন, ‘‘শুধুমাত্র মিথ্যাচার আর সাম্প্রদায়িক উস্কানিতেই নির্ভর করে টিকে রয়েছে বিজেপি। বিজেপির সংগঠন মানে তো এখন অধিকারী প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মচারী হওয়া। যাঁরা তা হতে চাইছেন না, সেই সব বুথে কমিটি করতে ব্যর্থ হচ্ছে বিজেপি।’’
জেলা বিজেপির একাংশ সূত্রের খবর, এখনও অনেকাংশে গৃহ সম্পর্ক অভিযান বাকি রয়েছে। সব মিলিয়ে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ গৃহ সম্পর্ক অভিযান সম্পূর্ণ করা গিয়েছে। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক অরূপ দাস বলছেন, ‘‘বুথের স্বশক্তিকরণ একটা নিয়মিত প্রয়াস। প্রতিদিন প্রতিটা বুথকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা চলছে। কোথাও কোন সমস্যা নেই।’’
কর্মী সম্মেলন
তমলুক: তৃণমূলের এসসি, ওবিসি সেলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির উদ্যোগে রাজনৈতিক কর্মী সম্মেলন হল রবিবার। তমলুক শহরে সুবর্ণ জয়ন্তী ভবনে সম্মেলনটি হয়। সম্মেলনে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ের লক্ষ্যে দলের সমস্ত নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার আহ্বান জানানো হয়। সভায় ছিলেন তৃণমূল এসসি, ওবিসি সেলের রাজ্য সভাপতি তাপস মণ্ডল, তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র, নন্দকুমারের বিধায়ক সুকুমার দে, মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী, তৃণমূল তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় ও জেলা চেয়ারপার্সন চিত্তরঞ্জন মাইতি, তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়, তৃণমূলের তমলুক শহর সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া ও এসসি ওবিসি সেলের জেলা সভানেত্রী তৃপ্তি বর্মণ খাঁড়া।