—নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত বামেদের দখলেই যেতে চলেছে। ফলপ্রকাশের পরেই তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কারণ, নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন যাওয়ার কথা ছিল তাদের দিকেই। সেই হিসাবে বামেদের হাতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। কিন্তু বোর্ড গঠনের সময়েই ওলোটপালট হয়ে গেল সব! গোপন ব্যালটে ভোটাভুটিতে বামেদের ছাপিয়ে গেল বিজেপি। বামেরা যা ভোট পাওয়ার, তা-ই পেল। কিন্তু বিজেপি ‘অপ্রত্যাশিত’ ভাবে তার চেয়েও বেশি ভোট পেয়ে দখল করল পঞ্চায়েত। সিপিএমের অভিযোগ, শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্যেরাই বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, তারা কাউকেই ভোট দেয়নি। ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন। এ নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ব্লকের বিষ্ণুবার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে।
এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনের মধ্যে বিজেপি পায় পাঁচটি আসন। তৃণমূল ও সিপিএম জেতে তিনটি করে আসনে। আর তিনটি আসনে জেতেন সিপিএম সমর্থিত তিন নির্দল প্রার্থীরা। হিসাব মতো বামেদের হাতে ছিলেন ছ’জন সদস্য। বৃহস্পতিবার বোর্ড গঠনের সময় পঞ্চায়েতে প্রধান এবং উপপ্রধান নির্বাচনের ভোটাভুটিতে দেখা যায়, বামেদের পক্ষে ছ’টি ভোটই প়ড়েছে। কিন্তু বিজেপি পেয়েছে আটটি ভোট। এর ফলে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হন সরস্বতী জানা ডিন্ডা ও উপপ্রধান হন অশোককুমার পট্টনায়েক।
ভোটাভুটির পর বাম সমর্থিত নির্দল সদস্য অনিমেষ প্রামাণিকের অভিযোগ, ‘‘এখানে বামেদের ঠেকাতে বিজেমূলের জোট হয়েছে। যেখানে বামেরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এগিয়ে ছিল, সেখানে বিজেপিকে সমর্থন জানিয়ে বোর্ড গঠনে সাহায্য করল তৃণমূল। এলাকার মানুষ তৃণমূলের এই রামধনু জোটকে কোনও দিনই মান্যতা দেবে না। বিজেপিকে উৎখাত করতে যেখানে দেশ জুড়ে তৃণমূল লড়াই করছে, সেখানে তমলুকে এমন জোট ভাবাই যায় না।’’
পাল্টা তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী বিকাশ মাইতি বলেন, ‘‘আমরা তিন জন তৃণমূল থেকে জিতেছি। বোর্ড গঠনের পর দেখা যায়, বিজেপিকে বাড়তি তিন জন সমর্থন করেছেন। আমাদের দলের স্পষ্ট নির্দেশ, কোনও ভাবেই বিজেপির সঙ্গে জোট নয়। তাই আমরা ভোটদান থেকে বিরত ছিলাম। আমরা শপথ নেওয়ার পর বসেছিলাম। পরে দেখা গেল বিজেপি আটটি ভোট পেয়ে পঞ্চায়েত দখল করেছে। বাড়তি তিনটি ভোট বাম সমর্থিত নির্দলের।’’
প্রধান পদে নির্বাচিত হওয়ার পর সরস্বতী বলেন, ‘‘আজ গোপন ব্যালটে ভোট হয়েছিল। সেখানে দেখলাম আমরা আটটি ভোট পেয়েছি। এর জন্য আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। তবে কার সমর্থনে এই বোর্ড গঠন হল সেই সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। আমাদের বোর্ড গঠনে কারা সমর্থন করল, জানি না। তবে যাঁরাই করেছেন, তাঁদের আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা একটি স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দিতে চাই। যাঁরা আমদের সঙ্গে থাকবেন, তাঁদের সকলকে নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব।’’