কাঁথি শহরে হালখাতা উপলক্ষে ছাপানো আমন্ত্রণপত্র পড়ে রয়েছে একটি দোকানের মধ্যে। নিজস্ব চিত্র
বাংলা নতুন বছর শুরু হয়ে গেল। প্রতিবছর আগের দিন প্রস্তুতিতে দম ফেলার ফুরসত মেলে না কী দোকানদার, কী মিষ্টি ব্যবসায়ী সকলের। কিন্তু এ বার করোনার জেরে নতুন বছরের হালখাতার অনুষ্ঠান আপাতত ঠান্ডাঘরে।
জেলার তমলুক, হলদিয়া কাঁথি ও এগরা— চার মহকুমাতেই নববর্ষের অনুষ্ঠান ঘিরে কোনও আয়োজন চোখে পড়েনি সোমবার। বাংলা নববর্ষের সকালে তমলুক শহরে বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিয়েই দোকানের নতুন খাতার শুভ সূচনা করতেন দোকানদার থেকে ব্যবসায়ীরা। লকডাউনের জেরে এখন মন্দিরে প্রবেশ থেকে পুজো দেওয়া বন্ধ। শহরের সমস্ত সোনার দোকান-সহ অধিকাংশ দোকানও বন্ধ। করোনা সতর্কতায় লকডাউনের জেরে বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে বেরনো নিষেধ। তাই নববর্ষ উপলক্ষে হালখাতা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েও তা বন্ধ রেখেছেন দোকানদার থেকে ব্যবসায়ীরা। অনেকে ক্রেতাদের আমন্ত্রণ ‘কার্ড’ ছাপিয়েও তা বিলি করতে পারেনি। আবার নতুন বছরের ক্যালেন্ডার ছাপানোর অর্ডার দিয়েও তা নেওয়ায় আগ্রহ দেখাননি অধিকাংশ দোকানদার।
তমলুক শহরের পুরনো পঞ্জাব ব্যাঙ্ক মোড়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী রাজা সিংহ বলেন, ‘‘ক্রেতাদের আমন্ত্রণ জানাতে প্রায় আড়াই হাজার কার্ড ছাপিয়েছি। ক্যালেন্ডার তৈরির জন্য কলকাতার এক ছাপাখানাকে অর্ডার দেওয়া রয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে ক্রেতাদের নাম লেখা চলছিল। কিন্তু লকডাউনে সব বন্ধ রাখতে হয়েছে।’’
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির তমলুক শাখার সম্পাদক নারায়ণ মাইতি বলেন, ‘‘চড়া দামের জন্য সোনার কাজ কমে গিয়েছিল। লকডাউনের জেরে সোনার দোকান বন্ধ থাকায় এখন একদম কাজ নেই। কারিগররা খুবই আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন।’’
প্রতি বছর নববর্ষের দিনে কাঁথি শহরের ব্যবসায়ী থেকে দোকানদারেরা কালীমন্দির ও ভবতারিণী মন্দিরে গিয়ে পূজো দিয়ে হালখাতার সূচনা করতেন। এ বার নববর্ষে কী ভাবে মন্দিরে পুজো দেবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাঁরা। রাজাবাজার এলাকার এক মুদি দোকানদার বলেন, ‘‘করোনার জেরে এ বার মন্দিরে পুজো দিতে যাচ্ছি না। তবে রীতি মেনে দোকানে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ কাঁথি বাজার ব্যবসায়ী সমন্বয় সমিতির কর্মকর্তা জগদীশ দিন্দা বলেন, ‘‘আপাতত দোকানে হালখাতার অনুষ্ঠান হচ্ছে না। আপাতত জনজীবন বাঁচানোই লক্ষ্য।’’