নববর্ষের আগে। মেদিনীপুর শহরের একটি মিষ্টির দোকানে। নিজস্ব চিত্র
পয়লা বৈশাখ মানেই হালখাতা উৎসব। ক্যালেন্ডার বিতরণ, মিষ্টিমুখ। সেই চেনা ছবিটা এ বার উধাও। তাই মন ভাল নেই মেদিনীপুরের ব্যবসায়ীদেরও। একই চিত্র ঝাড়গ্রাম শহরেও।
সোমবার দুপুর। মেদিনীপুরের বড়বাজারের এক দোকানে ঝাড়া-মোছার কাজ চলছে। দোকানের শাটার অর্ধেক নামানো। কাল হালখাতা হচ্ছে তো? দোকান মালিকের জবাব, ‘‘দোকানে সম্ভব না হলেও বাড়িতেই নিয়মরক্ষার পুজো করতে হবে।’’ মেদিনীপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায় বলছিলেন, ‘‘বেশিরভাগ দোকানেই বছরের প্রথম দিন গণেশ পুজো হবে না বলে শুনেছি। যাঁরা পুজো করবেন, তাঁরা অনুষ্ঠান করবেন না।’’
কোতোয়ালিবাজারের কাছে রঙের দোকান রয়েছে বিধানপ্রকাশ পালের। বিধানপ্রকাশ বলছিলেন, ‘‘প্রতি বছর পয়লা বৈশাখে পুজো হয়। মিষ্টিমুখ করাই। কিন্তু এ বার দোকান বন্ধ। পুজোটাও কী ভাবে করব ভাবছি।’’ আগে বছরের এই সময় চৈত্র সেল চলত। বাজার সরগরম থাকত। এ বার ছবিটা অন্য। মেদিনীপুরের ছোটবাজারের কাছে ছাপাখানা রয়েছে অভিজিৎ রায়দের। তিনি বলছিলেন, ‘‘আট হাজার ক্যালেন্ডারের বরাত এসেছিল। নিইনি।’’ পয়লা বৈশাখে মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে। জানা যাচ্ছে, এ বার বেশিরভাগই থাকবে।
একে লকডাউন, অন্য দিকে ব্যবসা বন্ধের ফলে ক্ষতির বিপুল বোঝা— তাই এ বছর হালখাতাই করছেন না ঝাড়গ্রাম শহরের অনেক ব্যবসায়ী। অরণ্যশহরের জুবিলি বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী দেবাশিস ঘোষ বলছিলেন, ‘‘যাঁরা ধারে জিনিসপত্র কিনেছিলেন, তাঁরা এখন শোধ করবেন বলে আশা করছি না। কীসের জন্য দোকান খুলব?’’ শহরের একাংশ ব্যবসায়ী জানান, সকালে দোকান খুলে শাটার নামিয়ে ধুপ-ধুনো দেখিয়ে আসবেন। কলেজ রোডের একটি মিষ্টির দোকানের মালিক শুভাশিস কুণ্ডু বলেন, ‘‘অন্য পয়লা বৈশাখে গড়ে ৩০-৪০ হাজার টাকার অর্ডার থাকত। এ বছর এক টাকারও অর্ডার নেই।’’