বাড়ির এ দিক- ও দিক ঘুরতে ঘুরতে পুলিশ আধিকারিকেরা দেখতে পান বাড়ির আর এক সদস্যকে। তার নাম জ্যাঙ্গো। —প্রতীকী চিত্র।
আত্মহত্যা করেছেন এক দম্পতি। রেখে গিয়েছেন তাঁদের আদরের পোষ্যকে। কিন্তু তাঁদের অবর্তমানে সেই পোষ্যের কী হবে? সেটা দম্পতিকে ভাবিয়েছিল জীবন শেষ করে দেওয়ার আগের মুহূর্তেও। এমনই সুইসাইড নোট অবাক করেছে তদন্তকারীদেরও। পশ্চিম মেদিনীপুরের আলমগঞ্জের ঘটনা।
শুক্রবার ঘর থেকে এক দম্পতির দেহ উদ্ধার করেছে ঘাটাল থানার পুলিশ। মৃতদের নাম দেবাশিস ঘোষ এবং জলি ঘোষ। ঋণের দায়ে ওই দম্পতি আত্মহত্যা করেছেন প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সুইসাইড নোটেও তেমনটাই লিখে গিয়েছেন তাঁরা। আর সেই চিঠির একটি অংশে রয়েছে পোষ্যকে নিয়ে তাঁদের চিন্তার কথাও।
শুক্রবারই পুলিশ ওই দম্পতির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বাড়ির এ দিক- ও দিক ঘুরতে ঘুরতে পুলিশ আধিকারিকেরা দেখতে পান বাড়ির আর এক সদস্যকে। তার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে সুইসাইড নোটে। যে চিঠিটি পুলিশ উদ্ধার করেছে তাতে রয়েছে দম্পতির আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্তের কথা। কিন্তু তাঁদের অবর্তমানে পোষ্যের কী হবে?
গোল্ডেন রেট্রিভার প্রজাতির একটি কুকুর রেখেছিলেন দম্পতি। আদর করে পোষ্যের নাম রেখেছিলেন জ্যাঙ্গো। কিন্তু তাঁরা তো মৃত্যুর পথ বেছে নিচ্ছেন। এমতাবস্থায় জ্যাঙ্গো তো অনাথ হয়ে পড়বে। তার কী হবে? দম্পতি সুইসাইড নোটে আবেদন করেছেন জ্যাঙ্গোকে যেন কোনও বন্যপ্রাণীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়। কোন ডাক্তার পোষ্যের দেখভাল করতেন, জ্যাঙ্গোর খাদ্যাভাস ঠিক কী— এই সব কিছুই চিঠিতে উল্লেখ করে গিয়েছেন দম্পত্তি।
মন খারাপ করে বসে রয়েছে জ্যাঙ্গো। —নিজস্ব চিত্র।
তবে আপাতত জ্যাঙ্গোকে কোথায় রাখা হবে, এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছে পুলিশ। মালিক এবং মালকিনের মৃত্যুর পর একেবারে চুপ হয়ে গিয়েছে তাঁদের পোষ্য। শুধু এ দিক-ও দিক ঘুরে দেখছে জ্যাঙ্গো। তার দু’টি চোখ খুঁজছে মালিক-মালকিনকে।
দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ঘাটালের এসডিপিও অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, ‘‘দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি, একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। পুরোটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’