জিমের পক্ষ থেকে প্রচার করা ভিডিয়োতে এa ভাবেই দেখা গিয়েছে ডেবরার বিডিওকে।
ব্লক প্রশাসনের তিনি সর্বোচ্চ আমলা। পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিসের মহিলা ক্যাডার। সেই বিডিও শরীরচর্চাও করেন। যান ব্লকের সদরে মাস ছ’য়েক আগে চালু হওয়া ‘ফিটনেস সেন্টারে’। তবে সরকারি নয়, অভিজাত ওই জিম বেসরকারি। এ বার সেই বিডিও-কেই প্রচারের কাজে ব্যবহার করলেন বেসরকারি ওই জিম কর্তৃপক্ষ। প্রচারের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসায় বিডিও প্রশ্নের মুখে পড়েন। এরপরই সমাজমাধ্যম থেকে সরানো হল বিতর্কিত ভিডিয়োটি!
ডেবরা ব্লকে গত কয়েকদিন ধরেই সমাজমাধ্যমে কার্যত ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিয়ো (সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। দেখা গিয়েছে ডেবরার বিডিও শিঞ্জিনী সেনগুপ্তকে। সেখানে বালিচকে চালু হওয়া একটি বেসরকারি জিমের সার্বিকভাবে প্রশংসা করছেন বিডিও। জিম সেন্টার ও কর্ণধারের নাম উল্লেখ করে তারা কত উন্নত পরিষেবা, আধুনিক সরঞ্জাম দিচ্ছেন তা বিডিও জানিয়েছেন। তিনিও যে ওই জিমের সূচনা লগ্ন থেকে একজন সদস্য সেটাও জানাতে ভোলেননি বিডিও। সবমিলিয়ে বিডিওর এমন প্রচারমূলক প্রতিক্রিয়ার একটি ভিডিয়ো বিজ্ঞাপনের কাজে লাগিয়ে সমাজমাধ্যমে প্রচার করেছিলেন জিম কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন উঠছে, একজন সরকারি আমলা কী এভাবে বেসরকারি জিমের প্রচার করতে পারেন? বিডিও শিঞ্জিনী বলেন, “আমি ওই জিমের একজন সদস্য। সেটা আমার ব্যক্তিগত জীবন। অন্য সদস্যদের মতো জিমের পক্ষ থেকে আমার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল। আমি সেটা ওদের দিয়েছিলাম।” স্বাভাবিকভাবে ডেবরার বিডিও এমন ঘটনায় কোনও বিতর্ক খুঁজে পাচ্ছেন না। তবে এ দিন এমন প্রশ্নের পরেই সমাজমাধ্যম থেকে উধাও হয়ে যায় ওই ভিডিয়ো (ডাউনলোড করা সেই ভিডিয়ো আনন্দবাজারের হেফাজতে রয়েছে)।
ভিডিয়োয় ‘বিডিও অফ ডেবরা’ বলে পরিচয় দেওয়া ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন জিমের কর্ণধার বিমানচন্দ্র ভুঁইয়া। তিনি বলেন, “আমাদের জিমে অন্য সদস্যদের মতো বিডিওর থেকেও প্রতিক্রিয়া চেয়েছিলাম। উনি দিয়েছিলেন। সেটা আমরা সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলাম। এতটা ভেবে করিনি। তবে বিডিও হিসাবে ভিডিয়োতে ওঁর পরিচয় দেওয়া ঠিক হয়নি।” বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তন্ময় দাস বলেন, “একজন সরকারি প্রশাসনিক আমলার অনেক বাধ্যবাধকতা থাকে। কোনও সরকারি জিম সম্পর্কে বিডিও কোনও বিজ্ঞাপন দিতেই পারেন। কিন্তু ডেবরার বিডিও একেবারে বেসরকারি জিমের বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। আসলে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ বহু মন্ত্রী তো অতীতে ভুয়ো আর্থিক সংস্থার প্রচার করেছেন। তাতেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন ডেবরার বিডিও।” বিষয়টি নিয়ে এ দিন জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমরা অনেক রেস্তরাঁয় গেলে তাঁরা অভিজ্ঞতার প্রতিক্রিয়া নেয়। তেমনই ডেবরার বিডিও হয়তো প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। কিন্তু এমন ভিডিয়ো যাতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয় সেই বিষয়ে বিডিওদের সতর্ক করব।”