মুখে মাস্ক থাকলেও মানা হল না দূরত্ববিধি। পুরুলিয়া - হাওড়া এক্সপ্রেসে। চন্দ্রকোনা রোড স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
অন্য শাখার তুলনায় বেশ খানিকটা দেরিতেই ট্রেনের চাকা গড়াল দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর-আদ্রা শাখায়। সোমবার প্রথম দিনেই অবশ্য দেখা গেল করোনা বিধি উপেক্ষা করার হরেক চিত্র। লোকালের কামরায় দেখা অনেক যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই। প্ল্যাটফর্মে আঁকা গোল দাগের বাইরেও ঘোরাফেরা করতে দেখা গেল যাত্রী, এমনকি রেলকর্মীদেরও।
অথচ রেলের পক্ষ থেকে নোটিস দিয়ে ট্রেন সফরে সব রকম কোভিড বিধি মানার কথা বলা হয়েছিল। যাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য আগে থেকেই গোল গোল দাগ আঁকা হয়েছিল স্টেশনে স্টেশনে। এ দিন সকাল থেকে গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোড, শালবনি-সহ এই শাখার প্রায় প্রতিটি স্টেশনে মাইকে হেঁকে যাত্রীদের কোভিড বিধি মেনে ট্রেনে ওঠানামা, টিকিট কাটার কথা বলা হচ্ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো উল্টো ছবি।
গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোড স্টেশনে দেখা গিয়েছে টিকিট কাউন্টারে ঠাসাঠাসি লাইন। ট্রেনেও দূরত্ব বিধির বালাই নেই। খড়্গপুর-আসানসোল এক্সপ্রেস ও পুরুলিয়া-হাওড়া স্পেশাল এক্সপ্রেসের কামরায় ঠেসাঠেসি করে বসেই যাতায়াত করেছেন যাত্রীরা। কামরার প্রবেশপথেও দেখা গিয়েছে আগের মতো ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য।
তুলনায় প্রথম দিন মেদিনীপুর-আদ্রা মেমু লোকালে যাত্রীদের তেমন ভিড় দেখা যায়নি। তবে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেরই মুখ ছিল আঢাকা। গড়বেতা স্টেশনে গিয়ে যাত্রীদের করোনা বিধি মেনে ট্রেনে যাতায়াত করতে পরামর্শ দেন রেলযাত্রী সংগঠন খড়্গপুর-আদ্রা রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দুর্গাদাস দে। স্টেশন ম্যানেজার তপন রায় যাত্রীদের দূরত্ব বিধি মেনে ট্রেনে ওঠানামার কথা বলেন। আদ্রা ডিভিশনের কমার্শিয়াল বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কোভিড বিধি মেনে ট্রেন যাত্রা করতে বলা হয়েছে। প্রতিটি স্টেশনে মাইকেও বলা হচ্ছে।’’
এ দিন স্টেশনে এসে অনেকে হয়রানির শিকারও হয়েছেন। সকালেই হাওড়া যাবেন বলে গড়বেতা স্টেশনে স্ত্রী, পুত্রকন্যাকে নিয়ে চলে এসেছিলেন প্রভাত কুণ্ডু। ভেবেছিলেন পুরুলিয়া-হাওড়া এক্সপ্রেসে যাবেন। স্টেশনে এসে বুকিং কাউন্টারে টিকিট কাটতে গিয়ে শোনেন ট্রেনে কোনও অসংরক্ষিত কামরা নেই, আগে থেকে সংরক্ষণ হয়ে যাওয়ায় একটিও আসন খালি ছিল না। এক্সপ্রেসের জন্য প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে টিকিট কাটতে গিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়েন।