ফাইল চিত্র
আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ও পান বরজের জন্য সরকারি সাহায্য প্রাপকের তালিকা তৈরি নিয়ে ইতিমধ্যেই দুর্নীতি-স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন পঞ্চায়েতে রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরাও। এ বার ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার জন্য ‘ফুড কুপন’ বিতরণেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠল।
বুধবার নন্দকুমার ব্লকের ব্যবত্তারহাট (পশ্চিম) গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ভিন্ রাজ্য থেকে বাড়ি ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের বঞ্চিত করে পরিযায়ী শ্রমিক নয় এমন বাসিন্দাদের ‘ফুড কুপন’ বিলি করে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি ও নেতারা পরিযায়ী শ্রমিক নয় এমন দলীয় সমর্থকদের একাংশকে ফুড কুপন বিলি করছেন। এদিন দুপুরে পঞ্চায়েত অফিসে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিক্ষোভে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে পঞ্চায়েত প্রধান তাঁদের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। এদিন কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিককে ‘ফুড কুপন’ দেওয়াও হয়েছে।
‘ফুড কুপন’ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান স্বপ্না মাজী। তাঁর দাবি, ‘‘এ দিন যে সব পরিযায়ী শ্রমিক পঞ্চায়েত অফিসে ‘ফুড কুপন’ চাইতে এসেছিলেন তাঁরা আগে আবেদন করেননি। তাই তাঁদের বিডিও অফিসে আবেদন জানাতে বলা হয়েছে। আগে যাঁরা আবেদন করেছিলেন তাঁদের এ দিন ‘ফুড কুপন’ দেওয়া হয়েছে।’’
অন্যদিকে এদিন তমলুক ব্লকের পিপুলবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েত অফিসে এলাকার পরিযায়ী শ্রমিক ও দুঃস্থ বাসিন্দা মিলিয়ে বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ‘ফুড কুপন’ না পাওয়ার অভিযোগ তুলে আবেদন জানাতে যান। কিন্তু পঞ্চায়েত অফিসে পরিযায়ী শ্রমিক ছাড়া অন্য কারও আবেদন জমা নেওয়া হবে না জানানোয় ক্ষুদ্ধ বাসিন্দারা বিডিও অফিসে গিয়ে আবেদন জমা দেন।
স্থানীয় এসইউসসি নেতা শম্ভু মান্না বলেন, ‘‘কোয়রান্টিন সেন্টারগুলিতে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘ফুড কুপন’ দেওয়া হলেও বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ ও দুঃস্থ বাসিন্দাদের ‘ফুড কুপন’ দেওয়া হয়নি। তাঁরাই পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েছিলেন আবেদন জানাতে। কিন্তু পঞ্চায়েত আবেদন না নেওয়ায় বিডিও অফিসে আবেদন জানানো হয়েছে।’’
পঞ্চায়েত প্রধান জহরলাল রাউৎ অবশ্য বলেন, ‘‘এলাকার আশাকর্মীদের মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করে ‘ফুড কুপন’ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এ দিন যাঁরা এসেছিলেন তাঁরা কেউ পরিযায়ী শ্রমিক নন। এসইউসি রাজনীতি করতে কিছু মানুষকে ভুল বুঝিয়ে নিয়ে এসেছিল।’’