Kurmi

protest: ‘ডহরে করম’, পরবেও বিক্ষোভ

রাজ্যে বসবাসকারী ৬০ লক্ষ কুড়মিদের উৎসবের দিনটিকে কেন পুরোদস্তুর ছুটি দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কুড়মিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৪৬
Share:

ফাইল চিত্র।

করম পরবের দিনে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন কুড়মি সংগঠনের সদস্যরা। এ দিন বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথা মোড়ে ‘ডহরে করম’ (রাজপথে করম) কর্মসূচি পালন করল বিভিন্ন কুড়মি সামাজিক সংগঠন। এর ফলে ঘণ্টা তিনেক অবরুদ্ধ হয়ে যায় শহরের মেন রোড, যেটি বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম ৫ ‌নম্বর রাজ্য সড়ক। আটকে পড়েন তৃণমূলের জেলা নেতা অজিত মাহাতোও।

Advertisement

প্রতি বছর এ রাজ্যের সরকার করম পরবের দিনে ‘সেকশনাল হলি-ডে’ ঘোষণা করে। এ বারও তাই করা হয়েছে। কুড়মিদের দাবি, সম্প্রদায়ভিত্তিক ওই ছুটির নির্দেশিকায় কেবল আদিবাসীদের উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ করম পরব মূলত পালন করেন কুড়মিরা। এ ভাবেই প্রতি বছর কুড়মিদের সাংস্কৃতিক পরম্পরাকে অস্বীকার করে অবহেলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কুড়মিদের প্রশ্ন, বিহারি সম্প্রদায়ের ছট পুজো সম্প্রদায়ভিত্তিক হলেও এ রাজ্যে পূর্ণ ছুটি দেওয়া হয়। তা হলে রাজ্যে বসবাসকারী ৬০ লক্ষ কুড়মিদের উৎসবের দিনটিকে কেন পুরোদস্তুর ছুটি দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কুড়মিরা। এরই প্রতিবাদে উৎসবের দিনেই প্রকাশ্য রাস্তায় করম পরব পালনের সিদ্ধান্ত নেয় বিভিন্ন কুড়মি সংগঠন। এ দিন দুপুর থেকে শহরের পাঁচ মাথা মোড়ে হলুদ ঝান্ডা নিয়ে জড়ো হন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। ওই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতো, অশোক মাহাতো, তরুণ মাহাতো, শিবাজি মাহাতো, কৌশিক মাহাতোরা। এ দিন ওই বিক্ষোভ জমায়েতে আটকে পড়েন তৃণমূলের জেলা নেতা অজিত মাহাতো। অজিত জানান, তিনি করম পরব উপলক্ষে আলাদা শোভাযাত্রা করে আসছিলেন। কুড়মি সামাজিক সংগঠনগুলির কর্মসূচিতে সন্ধ্যা পর্যন্ত আটকে থাকেন অজিত। রাস্তার মাঝে করম গাছের ডাল স্থাপন করে সেখানেই করম নাচে-গানে মেতে ওঠেন বিভিন্ন কুড়মি সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা।

রাজেশ-অশোকরা দাবি তোলেন আগামী বছর থেকে করম পরবের দিনে পুরোদস্তুর ছুটি দেওয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। তাঁরা মনে করিয়ে দেন, এ দিন ঝাড়খণ্ড ও অসম রাজ্যে সেখানকার সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। অথচ এ রাজ্যে করম পরবের দিনটিকে সম্প্রদায়ভিত্তিক ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কৃষিভিত্তিক করম পরবে কোনও বিভাজন নয়, করম পরব হয়ে উঠুক সর্বসাধারণের মিলন ক্ষেত্র, এ দিন জমায়েত থেকে রাজ্য সরকারের কাছে এমনই আহ্বান জানান কুড়মিরা।

Advertisement

এ দিন জঙ্গলমহলের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ জানাতে ‘ডহরে করম’ পালন করেন কুড়মিরা। এ দিন দুপুরে জেলাশাসকের কার্যালয়ে প্রাঙ্গণে সরকারি ভাবে করম পরবের উদ্‌যাপন অনুষ্ঠান হয়। সেখানে ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস, জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত, গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো, জেলা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের প্রকল্প আধিকারিক পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায় ছিলেন। এ দিন পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবিলা ও সাঁকরাইল ব্লকের ছত্রি এলাকায় করম পরব পালিত হয়।

পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সুনীল মাহাতো বলছেন, ‘‘করম পরবের দিনটিকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি।’’ তবে বিভিন্ন কুড়মি সংগঠনের ‘ডহরে করম’ কর্মসূচি নিয়ে সুনীলের মত, রাস্তায় নেমে জমায়েত করে সাধারণ মানুষের অসুবিধা না করলেও চলত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement