সোমবার মারিশদায় কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পে আবেদনের ভিড়।
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘কৃষক সম্মান নিধি’ প্রকল্পে আবেদন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাধল। সোমবার কাঁথি-৩ ব্লকের মারিশদায় কৃষি দফতরের অফিসের সামনে এই নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় । স্থানীয় সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় ওই প্রকল্পের সুবিধা পেতে রবিবার রাত থেকেই কৃষি দফতরের অফিসের সামনে বহু কৃষক লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। সোমবার সকাল হতেই আবেদনকারীদের লাইন দীর্ঘ হতে থাকে। ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩২ হাজার কৃষক নথিভুক্ত রয়েছেন। এদিন প্রায় কুড়ি হাজার আবেদনকারী লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন বলেই ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা সরাসরি আবেদনকারীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করছিলেন। কিন্তু তাতে দেরি হওয়ায় বিক্ষোভ শুরু করেন কৃষকেরা। খবর পেয়ে বিডিও নেহাল আহমেদ-সহ মারিশদা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। এরপর সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করে কৃষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র নেওয়া হয়। যদিও আবেদনকারীদের অভিযোগ, আবেদন যাচাই না করেই তা নেওয়া হয়েছে। প্রাপ্তিস্বীকারও করা হয়নি।
কেন্দ্রীয় এই প্রকল্প অনেক আগেই চালু হয়ে গেলেও কিছুদিন আগে এ রাজ্যে তা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কৃষকেরা আবেদন করতে পারবেন বলে ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে আবেদনের মেয়াদ। শুধু কাঁথি-৩ ব্লক নয়। এদিন একই ভিড় দেখা গিয়েছে কাঁথি-১, দেশপ্রাণ সহ জেলার বহু ব্লকের কৃষি দফতরের অফিসে। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিদায়বেলায় রাজ্য সরকার কৃষকদের কেন্দ্রীয় সরকারের সুবিধা দিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু সেখানেো চূড়ান্ত অব্যবস্থা। স্বল্প সময়ের মধ্যে একেবারেই রাজ্য সরকার একে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না।’’ একই অভিযোগ তুলে সিপিএম নেতা ঝাড়েশ্বর বেরা বলেন, ‘‘গোটা দেশে কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন কৃষকেরা। রাজ্য সরকার এ রাজ্যের কৃষকদের বঞ্চিত করে রেখেছিল। যে ভাবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের কাছ থেকে আবেদনপত্র নেওয়া হচ্ছে তাতে সে সব আবেদন পত্র চায়ের দোকানে ঠাঁই পাবে বলে মনে হচ্ছে।’’
যদিও বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা পরিষদ সদস্য নন্দদুলাল মাইতি বলেন, ‘‘এককালীন কৃষকেরা এভাবে আবেদনপত্র জমা দিতে আসবেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা সেটা বুঝতে পারেননি। তবে যাতে স্বাভাবিকভাবে আবেদনকারীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র নেওয়া যায় সেই চেষ্টা চলছে।’’