সুস্থ: রুটি বেলছেন গিরিবালা।
করোনায় মৃত্যুমিছিলের মধ্যে তিনি ব্যতিক্রমী মুখ! ৮২ বছরের গিরিবালা পাত্র হোম আইসোলেশনে থেকেই করোনাকে জয় করেছেন।
ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের পেঁচাবিন্ধা গ্রামের এই বৃদ্ধা গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুকে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হন ভাঙাগড় গ্রামীণ হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর স্ট্রোক হয়েছে, তবে গুরুতর নয়। সুগার ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী গিরিবালা হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন ২৭ সেপ্টেম্বর নিয়মমাফিক করোনার আরটিপিসিআর পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তবে রিপোর্ট আসার আগেই ২৯ সেপ্টেম্বর গিরিবালাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে স্বাস্থ্য দফতর থেকে গিরিবালার নাতি পেশায় ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ পাত্রকে ফোনে জানানো হয়, বৃদ্ধার করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ। তাঁকে হোম আইসোলেশনে রাখতে বলা হয়।
পরে ৯ অক্টোবর ফের ভাঙাগড় গ্রামীণ হাসপাতালে গিরিবিলার করোনা পরীক্ষা করানো হয়। ১২ অক্টোবর বিদ্যুতের মোবাইল ফোনে মেসেজ করে রিপোর্ট নেগেটিভ বলে জানানো হয়। গিরিবালা সুস্থ হয়ে ওঠায় আপ্লুত তাঁর পরিজনেরা। গিরিবালার ছেলে পেশায় ব্যবসায়ী সুজিত পাত্র বলেন, ‘‘মায়ের করোনা হয়েছে জেনে খুবই চিন্তায় পড়েছিলাম। কারণ মায়ের বয়স ৮২ আর আমার বয়স ৬৫। তাই আমার ছেলে বিদ্যুৎই নিভৃতবাসে থাকাকালীন ওর ঠাকুমার দেখাশোনা করেছে।’’ সুস্থ হয়ে গিরিবালা এখন স্বাভাবিক কাজকর্ম করছেন। বাড়িতে আনাজ কেটে রান্নার কাজে বৌমা ও নাতবৌকে সাহায্যও করছেন। গিরিবালা বলছেন, ‘‘আমার করোনা হওয়ায় চিন্তায় ছিলাম। পরিবারের সদস্যরাও করোনা পরীক্ষা করিয়েছে। ওদের রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় পরম নিশ্চিন্তবোধ বোধ করছি।’’
তবে নাতি বিদ্যুৎ বলেন, ‘‘ঠাকুমার করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট চেয়ে বেশ কয়েকবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কন্ট্রোল রুম ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হেল্প লাইনে ফোন করি। জানানো হয়, ঠাকুমা করোনায় আক্রান্ত। তবে রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। জানানো হয়, পজিটিভ রিপোর্ট দেওয়া হয় না।’’ বিদ্যুতের প্রশ্ন, ‘‘আমার ঠাকুমা উপসর্গহীন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় বেঁচে গেলেন। কিন্তু এভাবে বয়স্কদের যথাযথ ভাবে পরিষেবা না দেওয়া হলে সেটা তো রীতিমতো ঝুঁকির ব্যাপার।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধা হোম আইসেলোশনে করোনামুক্ত হয়েছেন।’’ করোনা পজিটিভের আরটিপিসিআর রিপোর্ট কেন দেওয়া হয়নি? জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন ওই স্বাস্থ্য কর্তা।