প্রতীকী ছবি
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গোষ্ঠীকোন্দল অব্যাগত শাসকদলে। দলের নেতৃত্বের অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের অপসারণ চেয়ে লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব আনল দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যরা। ঘটনাটি নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আমদাবাদ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের।
তৃণমূলের টিকিটে জিতে আসা সাতজন পঞ্চায়েত সদস্য বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা বৈঠকের আয়োজন করার জন্য ১৩ মে চিঠি দিয়েছে বলে নন্দীগ্রাম-২ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। দেশজুড়ে লকডাউন চলাকালীন শাসকদল যখন করোনার মোকাবিলায় ব্যস্ত তখনই নন্দীগ্রামে দলের অন্দরে এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, ওই পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান সবিতা বারিকের সঙ্গে স্থানীয় অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি শেখ রওশন আলির বেশ কিছুদিন ধরে বিবাদ চলছে। লকডাউন চলাকালীন তা চরমে পৌঁছয়। গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে প্রধান পঞ্চায়েত অফিসে যাচ্ছেন না বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।ফলে পরিষেবা পেতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। কয়েকদিন আগে ওই পঞ্চায়েত অফিসে কর্মীদের আটকে রেখে তালা লাগিয়ে রেখে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষ। তার পরে পঞ্চায়েত অফিস খোলা হলেও এখনও পর্যন্ত অনুপস্থিত প্রধান।
১২ জন সদস্যের আমদাবাদ-২ পঞ্চায়েতের সব আসনই তৃণমূলের দখলে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান নির্বাচিত হন সবিতা বারিক। কিন্তু বর্তমান প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়ে বিডিওর কাছে চিঠি লিখেছেন দলের সাত জন পঞ্চায়েত সদস্য। একইসঙ্গে প্রধানের বিরুদ্ধে জেলা পরিকল্পনা এবং গ্রামীণ উন্নয়ন দফতরে বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ জানাযন পঞ্চায়েতের কয়েকজন সুপারভাইজার। আর এ সব ঘিরেই নন্দীগ্রামে শাসকের গোষ্ঠীকোন্দল তুঙ্গে।
উল্লেখ্য, গোষ্ঠীকোন্দল থামাতে আড়াই বছরের আগে অনাস্থা আনা যাবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরেও দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ না মেনে অনাস্থা আনায় শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রধানের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী বলে পরিচিত শেখ রওশন আলির কথায়, ‘‘দুই সপ্তাহ ধরে প্রধান অফিসে আসছেন না। বিষয়টি বিধানসভা নেতৃত্বকে জানিয়ে আলোচনার জন্য একাধিকবার বলা হয়েছে। কিন্তু কোনও আলোচনা হয়নি। সাধারণ মানুষেরও সমস্যা হচ্ছে। তাই প্রধানকে সরাতে অনাস্থা এনেছেন দলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা।’’
বিডিও সুরজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা চিঠি পেয়েছি।’’ আর প্রধান সবিতা বারিকের দাবি, ‘‘কী কারণে দু’সপ্তাহ ধরে অফিসে যাচ্ছি না তা দলীয় বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই হবে।’’ দলীয় প্রধানের দলের একাংশের ক্ষোভ নিয়ে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির তৃণমূলের চেয়ারম্যান মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা না করে আমদাবাদ পঞ্চায়েতে কয়েকজন সদস্য অনাস্থা এনেছেন। এটা দলবিরোধী কাজ। বিষয়টি দলের জেলা সভাপতিকে জানাব।’’