বুলবুলের দাপটে গাছ উপড়ে পড়েছে বাড়ির উপরে। ফাইল চিত্র
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে আমন ধান, আনাজ, পান, ফুলচাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে গোটা জেলাজুড়েই । ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কয়েক লক্ষ চাষি। জেলায় বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়েছে এমন মোট ৩১৯৯টি মৌজার মধ্যে ৩০১২টি মৌজাকে ক্ষতিগ্রস্ত ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ফসল বিমা যোজনায় ক্ষতিপূরণ ও ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পে আর্থিক সাহায্যের জন্য প্রশাসনিকভাবে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সাহায্য দিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জন্য প্রায় ২০৫ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল (এসডিআরএফ) থেকে জন্য এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে জেলা কৃষি দফতরকে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঘোষিত মৌজার কৃষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ডেসিমাল পিছু ৫৪ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কৃষকরা ন্যূনতম এক হাজার টাকা থেকে সর্বাধিক ২৭ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে দ্রুত আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দিতে সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে। জেলার প্রতিটি ব্লকে শিবির করে কৃষকদের কাছ থেকে আবেদন জমা নেবে কৃষি দফতর। আবেদনপত্রের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ, জমির নথি ও ব্যাঙ্ক আকাউন্ট নম্বরের নথির প্রতিলিপি ও সচিত্র পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, আজ বৃহস্পতিবার থেকেই খেজুরি-২, রামনগর-১, পটাশপুর-১ ও হলদিয়া ব্লকে কৃষকদের কাছ থেকে আবেদন জমা নেওয়া শুরু হবে। জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা আশিস বেরা বলেন, ‘‘বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত সব মৌজার ধান, আনাজ ও ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কৃষকদের সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ রাজ্য কৃষি দফতরের উচ্চ-পদস্থ আধিকারিকরা জেলায় এসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা যাতে ফসল বিমা যোজনায় আর্থিক সাহায্য পান তার জন্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সুবিধার জন্য ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পে ২০১৯-’২০ সালের খারিফ ও রবি মরসুমের টাকা একসঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ফের যাতে চাষ শুরু করতে পারেন সে জন্য প্রায় ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।