প্রতীকী ছবি।
পরিযায়ী যোগে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে।
শুধু নারায়ণগড় ব্লকেই ১০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এল শুক্রবার। পজ়িটিভ এসেছে দাঁতন ১ ও মোহনপুরেও। তিন ব্লক মিলিয়ে নতুন করোনো আক্রান্তের সংখ্যা ১৫। সকলেই মহারাষ্ট্র ও দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন। কারও কোনও উপসর্গ ছিল না। মোহনপুরের তিন জন আক্রান্তের মধ্যে দু’জন ও দাঁতন ১ ব্লকের একজন অবশ্য পরিযায়ী শ্রমিক নন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নারায়ণগড় ব্লকের আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জন হেমচন্দ্র পঞ্চায়েত এলাকার। বাকিদের মধ্যে ৩ জন বাখরাবাদ ও একজন বেলদা ২ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। তাঁরা সবাই ২১ মে বাড়ি ফেরেন। ২২ মে বেলদা গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এতদিন পরে রিপোর্ট আসায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। কারণ আক্রান্তরা সবাই ১৪ দিন নিভৃতবাস কাটিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। তাঁদের এখন মেদিনীপুর করোনা হাসপাতালে (আয়ূষ) পাঠানো হয়েছে। মোহনপুরের সাউটিয়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা মা ও মেয়ে গত ৩০ মে দিল্লি থেকে ফিরে হোম কোয়রান্টিনে ছিল। মোহনপুর পঞ্চায়েত এলাকার আরেক যুবক গত ২৪ মে দিল্লি থেকে ফিরে সরকারি নিভৃতবাসে ছিলেন। ওই তিন জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় তাঁদের পূর্ব মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দাঁতন ১ ব্লকের মনোহরপুর পঞ্চায়েত এলাকায় মহারাষ্ট্র ফেরত এক পরিযায়ী শ্রমিক ও লাদাখ ফেরত এক জওয়ানের রিপোর্টও পজ়িটিভ এসেছে শুক্রবার। তাঁদেরও ১৪ দিন নিভৃতবাসের মেয়াদ শেষ হয়েছিল। রিপোর্ট আসার পরে মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার ঘাটাল-দাসপুরেও নতুন করে ১৭ জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে তাঁদের মধ্যে ১৪ জনের বাড়ি ঘাটাল ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে। বাকি তিন জন দাসপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। এক্ষেত্রেও সবার নিভৃতবাসের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। আক্রান্তদের কয়েকজনকে মেদিনীপুর করোনা হাসপাতালে (আয়ূষ) পাঠানো হয়েছে। বাকিদের আপাতত দু’টি পৃথক নিভৃতবাস কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জনের করোনার উপসর্গ রয়েছে। এই নিয়ে ঘাটাল মহকুমায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১৩০। ঘাটাল ব্লকের আক্রান্তরা দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং মুম্বই থেকে ২১ ও ২২ মে দফায় দফায় ফিরেছিলেন। ২৩ মে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটিতে তাঁদের লালারসের নমুনা নেওয়া হয়। দাসপুরে আক্রান্ত তিন যুবকের দু’জন মহারাষ্ট্র ও একজন দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন ২৪ মে। ৬ জুন দাসপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে লালারস নেওয়া হয়।
গড়বেতার গনগনির বাসিন্দা দুই পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা রিপোর্টও পজ়িটিভ এসেছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই দিল্লি থেকে ফিরে হোম কোয়রান্টিনে ছিলেন ওই দুই যুবক। ৬ জুন গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আক্রান্তদের মেদিনীপুরে করোনা হাসপাতালে (আয়ূষ) নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই নিয়ে গড়বেতা ১ ব্লকে করোনা পজ়িটিভের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০। এর মধ্যেই প্রস্তাবিত পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে গনগনিতে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন রাস্তা তৈরি হচ্ছে। এলাকায় করোনা পজ়িটিভের সন্ধান মিললে তাতে কাজে কোনও সমস্যা হবে না বলে দাবি করেছেন গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ।