তমলুকের একটি রেস্তরাঁয় মাংস, খাবার পরখ করছেন সরকারি আধিকারিকেরা।
মৃত পশুর দেহ ভাগাড় থেকে তুলে এনে কলকাতার বিভিন্ন রেস্তরাঁয় বিক্রির ঘটনা প্রশাসনের নজরে এসেছে।
কলকাতায় এই ভাগাড় কান্ডের জেরে এবার নড়েচড়ে বসল রাজ্য সরকারের দুর্নীতি দমন শাখার মেদিনীপুর জেলা দফতর ও তমলুক পুরসভা কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিকেলে দুই দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা তমলুক শহরের তিন রেস্তরাঁয় অভিযান চালিয়ে দুটি রেস্তরাঁয় বেশ কিছুদিনের বাসি দুর্গন্ধযুক্ত মাংস, বিভিন্ন খাবারের সন্ধান পায়। ওই রেস্তরাঁগুলিতে বেআইনিভাবে ব্যবহার করা ডোমেস্টিক (ঘরের ব্যবহারের) গ্যাসের সিলিন্ডারও বাজেয়াপ্ত করা হয়। এই ঘটনায় দুই রেস্তরাঁর মালিককে আটক করেছে দুর্নীতি দমন শাখা। ঘটনার জেরে এদিন শহরের রেস্তরাঁগুলিতে বিক্রি করা খাবারের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাগাড় কাণ্ডের জেরে কলকাতার পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন জায়গায় চলা রেস্তরাঁ ও হোটেলগুলিতেও বিক্রি করা মাংস সহ বিভিন্ন খাবারের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । এই নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য অভিযানও চালানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি শহরে বিভিন্ন খাবারের দোকানে অভিযান চালায় কাঁথি পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। এরপরে শুক্রবার বিকেলে পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা ও তমলুক পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা যৌথভাবে তমলুক শহরের ভীমার বাজারের কাছে একাধিক রেস্তরাঁয় অভিযান শুরু করেন। এদিন বিকেলে শহরের ভীমার বাজারে দুটি নামী রেস্তরাঁয় হানা দিয়ে একটি রেস্তরাঁ থেকে বেশ কিছুদিনের পুরনো দুর্গন্ধযুক্ত মাংস, মাছ ও মাংস দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার, খাবারে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ রঙ উদ্ধার করেন দুর্নীতি দমন শাখা ও পুরসভার আধিকারিকরা। ওই রেস্তরাঁয় বেআইনিভাবে ব্যবহার করা কয়েকটি গ্যাস সিলিন্ডারও বাজেয়াপ্ত করা হয়। রেস্তরাঁর মালিককে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া ভীমার বাজার সংলগ্ন হ্যামিল্টন স্কুলের কাছে এক নামী রেস্তরাঁয় হানা দিয়ে বেশ কয়েকদিনের পুরুনো দুর্গন্ধযুক্ত খাসি মাংস, খাবার উদ্ধার করা হয়। সেখানেও বেআইনিভাবে ব্যবহার করা কয়েকটি গ্যাসের সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করা হয়। ওই রেস্তরাঁর মালিককেও আটক করা হয়েছে।
তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘শহরে একাধিক রেস্তরাঁয় এদিন অভিযান চালিয়ে বেশ কিছুদিনের পুরনো মাংস, মাছ ও বিভিন্ন খাবার মিলেছে। এই সব রেস্তরাঁ মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে এই অভিযান চালানো হবে।’’