ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়কে অবরোধ। ক্ষীরপাইয়ের হালদার দিঘিতে। নিজস্ব চিত্র
নানা দাবি আদায়ে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলনে নেমেছিল ভারত জাকাত মাঝি পারগানা সংগঠন। কিন্তু দিনের শেষে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধ কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াল সংগঠন। প্রসঙ্গত, রবিবার বিকেলে ঘাটাল এবং চন্দ্রকোনায় অবরোধ কর্মসূচি শুরুর কথা ছিল। কিন্তু সে দিন মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার শেষে আন্দোলন থেকে সরে এসেছিল সংগঠনটি। কিন্তু পরে সোমবার সকাল থেকে অবশ্য লিখিত প্রতিশ্রুতি-সহ স্থায়ী শিক্ষকের দাবিতে ক্ষীরপাই শহরের হালদারদিঘির মোড় অবরুদ্ধ করে আন্দোলন শুরু হয়। এর জেরে সোমবার ঘাটাল মহকুমা জুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা এক প্রকার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
সপ্তাহের প্রথম দিনের অবরোধে চরম দুর্ভোগে পড়েন সরকারি কর্মীরা-সহ সাধারণ মানুষ। বন্ধ হয়ে যায় দূরপাল্লার এবং স্থানীয় রুটের বহু বাস। পরিস্থিতির সামাল দিতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশ-প্রশাসনকে। তবে অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। শেষমেশ এ দিন সন্ধ্যা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়।
সোমবার সকাল ছ’টা থেকে শুরু হয় অবরোধ। দিনভর চলে অবরোধ কর্মসূচি। হালদারদিঘি মোড়ে অবরুদ্ধ হওয়ার ফলে ঘাটালের সঙ্গে বাঁকুড়া, হুগলি-সহ বিভিন্ন রুটের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ থাকে ঘাটাল-চন্দ্রকোনা ও ক্ষীরপাই আরামবাগ সড়ক। প্রসঙ্গত, ক’দিন ধরেই বেশ কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে ঘাটাল মহকুমা জুড়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু করে ঘাটালের ভারত জাকাত মাঝি পারগানা। তাদের মূল দাবি ছিল, ঘাটাল মহকুমার ১৪টি সাঁওতালি মাধ্যম প্রাথমিক স্কুলগুলিতে অলচিকি লিপিতে অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে বীরসিংহে আদিবাসী মিউজিয়াম ও প্রশাসনিক দফতর গুলিতে অলচিকি লিপিতে বোর্ড লেখা প্রভৃতি।
খবর, দাবিগুলি দ্রুত পূরণে উদ্যোগী হয় মহকুমা প্রশাসন। ঘাটালের মহকুমাশাসক শৌভিক চট্টোপাধ্যায়, মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী-সহ পদস্থ আধিকারিকরা দফায় দফায় বৈঠক করেন। প্রশাসনের এক সূত্রে জানানো হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি শুরু করেছে। দাবি মেনে স্কুলগুলিতে অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। বীরসিংহে আদিবাসী মিউজিয়ামের জন্য রবিবারই ঘাটালের বিডিও বীরসিংহে যান। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। অন্য দাবিগুলি মেটাতেও তৎপর হয় মহকুমা পুলিশ-প্রশাসন। সে কথা সংগঠনের নেতৃত্বদের জানিয়ে দেওয়া হয়। ভারত জাকাত মাঝি পারগানার ঘাটাল জেলার সহ-সভাপতি মনোরঞ্জন মুর্মু বলেন, ‘‘জেলার প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় আমরা সন্তুষ্ট। অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেওয়া হল।’’