বিজেপির পতাকা হাতে সাবিত্রী (বাঁ দিকে), পরে তৃণমূলে ফিরে। নিজস্ব চিত্র
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার একদিনের মধ্যেই ফের জোড়াফুলের পতাকা হাতে নিলেন তৃণমূলের টিকিটে জেতা এক পঞ্চায়েত সদস্য।
তৃণমূলের দাবি, ঝাড়গ্রাম ব্লকের চন্দ্রি গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্য সাবিত্রী খামরইকে ভয় দেখিয়ে শুক্রবার দুপুরে বিজেপির কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঝাড়গ্রাম ব্লকের চন্দ্রি চকে তাঁর হাতে গেরুয়া পতাকা তুলে দিয়েছিলেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী। তারপরে শনিবার সকালেই ঝাড়গ্রাম শহরের স্টেডিয়াম রোডে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতোর দলীয় কার্যালয়ে এসে তিনি তৃণমূলেই আছেন বলে জানান।
এ দিন অজিতের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে সাবিত্রী দাবি করেন, ‘‘পরিস্থিতির চাপে শুক্রবার গেরুয়া পতাকা ধরেছিলাম। আমি তৃণমূলেই আছি। তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিতদা যোগাযোগ করে আমাকে ফিরিয়ে এনেছেন। সমস্যায় পড়লে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।’’
তৃণমূলের ক্ষমতাসীন চন্দ্রি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ৮ জন সদস্যের মধ্যে সাবিত্রী-সহ ছ’জন তৃণমূলের। এছাড়া এক জন সিপিএম ও এক জন বিজেপির সদস্য আছেন। সাবিত্রী দু’বারের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য। ২০১৩ সালে প্রথমবার চন্দ্রি (মধ্য) বুথ থেকে নির্বাচিত হন তিনি। একই বুথ থেকে ২০১৮ সালেও দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হন। সাবিত্রীর স্বামী পেশায় রাজমিস্ত্রি। সাবিত্রী নিজে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঠিকা কর্মী। ঠিকাদারের অধীনে হাসপাতালে ওয়ার্ড গার্লের কাজ করেন তিনি।
চন্দ্রি অঞ্চলে এখন বিজেপির প্রভাব বেড়েছে। সাবিত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার জন্য সাবিত্রির উপরে চাপ বাড়াচ্ছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। তাঁর কর্মস্থলে গিয়েও তাঁকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য শাসানো হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই শুক্রবার চন্দ্রিতে বিজেপির কর্মসূচিতে গিয়ে গেরুয়া পতাকা ধরেন সাবিত্রী।
চন্দ্রি অঞ্চলের তৃণমূল নেতা কমলকুমার মাহাতো দাবি করেন, ‘‘সাবিত্রীকে স্থায়ী চাকরির টোপ দিয়েছিলেন বিজেপির নেতারা। সাবিত্রী ভুল বুঝতে পেরে দলে ফিরে এসেছেন।’’ সাবিত্রীকে দলে ফিরিয়ে আনার পরে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত বলেন, ‘‘সাবিত্রীর বাড়িতে নিয়মিত হানা দিয়ে কিছুদিন ধরেই তাঁকে ভয় দেখাচ্ছিলেন বিজেপির লোকজন। তাই চাপে পড়ে তিনি বিজেপি-র পতাকা ধরেছিলেন। ভুল বুঝতে পেরে শনিবারই দলে ফিরে এসেছেন।’’
জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথী আবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা ভয় দেখানোর অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘সাবিত্রী স্বেচ্ছায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। উনি হাসপাতালে ঠিকা-কাজ করেন। সেই কাজ থেকে বরখাস্তের ভয় দেখিয়ে সাবিত্রীকে তৃণমূলের পতাকা ধরতে বাধ্য করেছেন তৃণমূলের নেতারা।’’