পড়ুয়াদের আনা আনাজেই নবরত্ন

মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে নুন-ভাত দেওয়া হয়েছিল চুঁচুড়ার বালিকা বাণী মন্দিরে। বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের আচমকা স্কুল পরিদর্শনে সেই ছবি সামনে আসার পরে তোলপাড় চলছে রাজ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেশপুর শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০০:০১
Share:

বোর্ডে লেখা মেনু। নিজস্ব চিত্র

নিজেদের বাড়ির বাগানের আনাজ এনেছিল পড়ুয়ারা। কেউ এনেছিল লাউ ডগা, পুঁইশাক। কেউ এনেছিল কুঁদরি, ঢেঁড়স। সেই সব আনাজ দিয়ে হল নবরত্ন। বুধবার মিড ডে মিলে তা দেওয়া হল পড়ুয়াদের। এমন উদ্যোগ কেশপুরের মুণ্ডলিকা বিদ্যাপীঠের। খুশি পড়ুয়ারাও। সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তুষার ঘোষ, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী রিনি রায়দের কথায়, ‘‘স্কুলে মাঝেমধ্যে এমন হলে খুব ভাল হয়!’’

Advertisement

মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে নুন-ভাত দেওয়া হয়েছিল চুঁচুড়ার বালিকা বাণী মন্দিরে। বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের আচমকা স্কুল পরিদর্শনে সেই ছবি সামনে আসার পরে তোলপাড় চলছে রাজ্যে। বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, মিড ডে মিলের বিষয়টি তাঁর নজরে রয়েছে। এই প্রকল্পে যাতে কোনও ঘাটতি না হয়, সে জন্য আরও যত্নবান হতে নিয়মিত স্কুল পরিদর্শনেরও নিদানও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশ, সব স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়িতে নিয়মিত পরিদর্শনে যেতে হবে। মিড ডে মিলে কোনও অনিয়ম হচ্ছে কি না, দেখতে হবে। চেখে দেখতে হবে খাবারের মানও। ঘটনাচক্রে, বুধবারই কেশপুরের এই স্কুলে মিড ডে মিলের পাতে নবরত্ন পেয়েছে পড়ুয়ারা।

কেন এমন উদ্যোগ? স্কুল সূত্রে খবর, চলতি মাসের গোড়ায় স্কুলে পরিদর্শনে এসেছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌর মণ্ডল, কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ প্রমুখ। তাঁরা মিড ডে মিলের দিকে বাড়তি নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। পরে স্কুল ঠিক করে, পড়ুয়াদের কাছে শাক-আনাজের গুরুত্ব বোঝানো হবে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রজাপতি ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘এই ভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ।’’ স্কুলের সহ- শিক্ষক চঞ্চল হাজরার কথায়, ‘‘পড়ুয়াদের জানানো হয়েছিল, যে যতটুকু পারবে বাড়ির বাগানের আনাজ আনবে। সেই মতো পড়ুয়ারা আনাজ আনে। এর ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতাও গড়ে উঠবে।’’

Advertisement

এ দিন স্কুলে মিড ডে মিলের মেনু ছিল শুরুতে পাতিলেবু, শাকভাজা। পরে ভাত, ডাল, নবরত্ন, আর শেষ পাতে চাটনি। বস্তুত, মিড ডে মিলের বরাদ্দ তেমন না বাড়ায় তার মান নিয়ে চিন্তিত শিক্ষকদের একটা বড় অংশই। তাঁদের বক্তব্য, বরাদ্দ টাকায় পড়ুয়াদের ভাল খাবার দেওয়া কষ্টকর হয়। পড়ুয়াদের সপ্তাহে দু’দিন ডিম পাওয়ার কথা। রোজ আনাজের তরকারি পাওয়ার কথা। একাংশ শিক্ষকের বক্তব্য, মিড ডে মিল বাবদ যে টাকা দেওয়া হয় তাতে একটা ডিমও কেনা যায় না। যৎসামান্য বরাদ্দে পড়ুয়াদের মুখে ডিমের সঙ্গে ভাত, ডাল, তরকারি তুলে দিতে কার্যত কালঘাম ছুটছে অনেক স্কুলেরই।

প্রশাসনের নির্দেশ রয়েছে, মিড ডে মিলে ‘ভেজ প্রোটিন’ বা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন দিতে হবে রোজ। সঙ্গে ভাত- ডাল- তরকারি। স্কুলের সহ- শিক্ষক চঞ্চলের কথায়, ‘‘মেনুতে আনাজের পরিমাণ বাড়াতে হবে। স্কুলে এই চেষ্টাও হয়। এ দিন একঘেয়েমি মেনু থেকে বেরিয়ে একটু অন্য রকম স্বাদও পেল পড়ুয়ারা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement