অভিযোগপত্র হাতে সেই ব্যবসায়ী। নিজস্ব চিত্র।
বাজারে ব্যবসা করতে গেলে ১ লক্ষ টাকা ‘তোলা’ দিতে হবে। চরম সমস্যার মুখে পড়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন এক মহিলা ব্যবসায়ী। যদিও তাতেও নাছোড় অভিযুক্তরা। বাজার কমিটির ঘোষণা, ‘‘টাকা ছাড়া নতুন কোনও ব্যবসায়ীকে বাজারে ব্যবসা করতে দেব না।’’ মেদিনীপুর শহরের রাজাবাজারের এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন। নতুন নতুন ব্যবসায় দিশা দেখাতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে একাধিক কর্মশালার আয়োজন হচ্ছে। এরই মাঝে মেদিনীপুর শহরে উঠে এল চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। মেদিনীপুরের রাজাবাজারে মাছ ব্যবসা করতে বসেন এক মহিলা ব্যবসায়ী। দিন দু-এক আগে বাজারের এক পাশে ছোট্ট এক ফালি জায়গায় নিজের মাছের পসরা সাজিয়ে বসেন। কিন্তু তাতেই এল বাধা। অভিযোগ, বাজার কমিটির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেখানে ব্যবসা করতে গেলে এক লক্ষ টাকা দিতে হবে। কিন্তু কোথায় পাবেন এত টাকা! আর দেবেনই বা কেন?
এই ‘তোলা’ না দেওয়ায় তাঁর ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ মহিলার। এ নিয়ে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। মেদিনীপুর পুরসভা এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবুও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ।
যদিও রাজাবাজার বাজার কমিটির এই ‘ঘোষণা’কে সম্পূর্ণ বেআইনি বলছে মেদিনীপুর পুরসভা। মেদিনীপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিপ্লব বসুর দাবি, এমন ঘটনাকে কখনও দল সমর্থন করে না। তাঁরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্য দিকে, টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করলেও বাজার কমিটির তরফে অভিযুক্ত সঞ্জয় চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘কোনও নতুন ব্যবসায়ীকে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না রাজাবাজারে।’’ তিনি জানান, এমনই সিদ্ধান্ত নাকি নেওয়া হয়েছে বাজার কমিটির তরফে।
এ নিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘মেদিনীপুর শহরে এই জিনিস ছিল না। শহরের মানুষের উত্তর জানতে চাওয়া উচিত।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘এই সরকারের আমলে লুট, তোলাবাজির রাজত্ব চলছে।’’ বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি অরূপ দাস বলেন, ‘‘বাজার কমিটির নাম নিয়ে শাসক দল তোলাবাজির নতুন পন্থা নিয়েছে।’’