তখনও চলছে উদ্ধারকাজ। নিজস্ব চিত্র
স্নানে নেমে মেয়ে বায়না ধরেছিল, পুকুরের এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে যাবে। বছর ছ’য়েকের মেয়ের মন রাখতে তাকে কাঁধে নিয়েছিলেন বাবা। পুকুর পার হওয়ার আগে ডুবতে শুরু করে বাবা-মেয়ে। পরিবারের অন্য সদস্যেরা উদ্ধার করেন মেয়েকে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি বাবাকে।
কেশিয়াড়ি থানার মামিদপুরে থাকে মুর্মু পরিবার। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতিদিনের মতো বুধবার দুপুরেও বাড়ির কাছে মোরাম খাদানের পুকুরে স্নান করতে নেমেছিলেন কালীচরণ মুর্মু (৩২)। পেশায় শ্রমিক কালীচরণের সঙ্গে পুকুরে নেমেছিলেন তাঁর স্ত্রী, মেয়ে এবং ভাই। ছিলেন স্থানীয় আরও একজন। মেয়ের বায়না মতো কালীচরণ পুকুর পার হওয়া চেষ্টা করতেই ঘটে বিপত্তি। পরিবারের অন্য সদস্যেরা দেখেন, বাবা-মেয়ে ডুবে যাচ্ছেন। কালীচরণের ভাই টিমু শিশুকে কোনও রকমে উদ্ধার করেন। টিমুর কথায়, ‘‘মেয়েটিকে ধরে পাড়ে এনে রেখে ফের গিয়ে দাদাকে আর খুঁজে পাইনি। পুকুরটি ওই জায়গায় বেশ গভীর।’’
পরে গ্রামবাসীরা পুকুরে নেমে দীর্ঘ ক্ষণ খোঁজ চালালেও কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। পুলিশ ও প্রশাসনে জানানো হয়। রাতে সিভিল ডিফেন্সে খবর দেয় প্রশাসন। ডুবুরি এসে রাত আটটা নাগাদ প্রায় কুড়ি মিনিটের চেষ্টায় পুকুর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। রাতে উদ্ধার কাজের তদারকি করেন কেশিয়াড়ি বিডিও সৌগত রায় ও জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মামনি মাণ্ডি-সহ কেশিয়াড়ি পুলিশ। বৃহস্পতিবার মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। মৃতের স্ত্রী মৌসুমী বলেন, ‘‘প্রতিদিন এই পুকুরে স্নান করত। মেয়েকে কাঁধে নিয়ে স্নান করতে নামে। নেশার ঘোরে সামলাতে পারেনি।’’ বিডিও বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরে সিভিল ডিফেন্সে খবর দিই। পরিবার যদি আবেদন করে, তার ভিত্তিতে সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে সাহায্যের বিষয়টি ভাবা হবে।’’