অর্পিতা দাস। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিপক্ষ ছিলেন পাঁশকুড়ার এক সময়ের জনপ্রিয় তৃণমূল নেতা কুরবান শায়ের স্ত্রী সাইদা সাবানা বানু খাতুন। রাজনীতির মঞ্চে তিনি পুরনো মুখ। দায়িত্ব সামলেছেন মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদের। সে তুলনায় পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির ৩ নম্বর আসনে একেবারেই আনকোরা প্রার্থী ছিলেন বিজেপির অর্পিতা দাস। বয়স নেহাতই অল্প। বিশ্ব বিদ্যালয়ে পাঠরতা। কিন্তু এই অর্পিতার কাছেই ধারাশায়ী সাইদা সাবানা বানু খাতুন। ২১ বছর বয়েসের পাঁশকুড়া-১ ব্লকের কনিষ্ঠতম এই প্রার্থীর উত্থানে চমক লেগেছে পাঁশকুড়ার বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে।
পাঁশকুড়ার কেশাপাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ডালপাড়া গ্রামে বাড়ি অর্পিতা। তিনি ‘এডুকেশন’ বিভাগের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী। চলছে প্রথম বর্ষ। বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, বেকারত্বকে হাতিয়ার করে ভোটের ময়দানে তিনি নেমেছিলেন। তাতেই এসেছে সাফল্য। অর্পিতার দাদু কালীপদ দাস কেশাপাট গ্রাম পঞ্চায়েতের দু'বারের সিপিএম প্রধান। বয়সের কারণে তিনি আর রাজনীতি করেন না। তবে ছোট থেকেই রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ ছিল অর্পিতার। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে অর্পিতার কাকা রতন দাস ডালপাড়া আসনে সিপিআইয়ের হয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। অর্পিতার বাবা স্বপন দাস পলসা আসনে বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী। মঙ্গলবার ভোটের ফলাফলে দেখা যায় কাকা এবং বাবা দু'জনেই পরজিত হয়েছেন। কিন্তু জিতেছেন অর্পিতা।
দুষ্কৃতীদের গুলিতে বছর কয়েক আগে নিহত হয়েছিলেন কুরবান শা। তাঁর স্ত্রী'র মতো শাসকদলের পরিচিত মুখের এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরোধী একজন এমএ পড়ুয়া ছাত্রী কতখানি লড়াই দিতে পারবেন, তা নিয়ে বিজেপি নেতারা সংশয়ে ছিলেন। কিন্তু সাবানকে ৩৫০ ভোটে হারিয়ে অর্পিতা এখন এলাকায় জনিপ্রয়। তিনি বলছেন, ‘‘বর্তমান রাজ্য সরকার চাকরি দিতে পারছে না। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার। তাই ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম। আমার দলের কথা মানুষের কাছে তুলে ধরি। মানুষ আমার ওপর আস্থা রেখেছেন।’’