—প্রতীকী ছবি।
১২ দিন ধরে নিজেদের ঘরবন্দি করে নিয়েছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধ ও তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে। একটানা এত দিন বাড়ির দরজা বন্ধ থাকায় সন্দেহ বাড়ছিল প্রতিবেশীদের মধ্যে। ডাকাডাকি করেও সাড়া মিলত না। এর পর পুলিশ ডেকে বাড়ির দরজা ভাঙতেই চক্ষু চড়কগাছ হল সকলের। দেখা গেল, ঘরের মেঝেতে শীর্ণকায় বাবার দেহ আগলে শুয়ে রয়েছেন মেয়ে! পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের পদুমবসান এলাকার ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম ভোলানাথ দে (৮০)। তিনি প্রাক্তন সরকারি কর্মী। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় তাঁর মেয়ে মান্তুকেও (৩৫) ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। পড়শিদের দাবি, মান্তু মানসিক ভারসাম্যহীন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষি দফতরের প্রাক্তন কর্মী ভোলানাথের দুই মেয়ে। ছোট মেয়ের স্বচ্ছল পরিবারে বিয়ে হলেও বড় মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় পরিবারে নিত্য অশান্তি লেগেই থাকত। শেষ পর্যন্ত স্বামী ও বড় মেয়েকে ছেড়ে ছোট মেয়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন স্ত্রী। তার পর থেকে ভোলানাথ ও তাঁর মান্তুর দেখভাল করতেন এক পরিচারিকা। পড়শিরা জানান, ১২ দিন ধরে ভোলানাথের বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। বাড়িতে ঢুকতে পারতেন না সেই পরিচারিকাও। প্রতিদিন ডাকাডাকি করে ফিরে যেতেন তিনি। বুধবার বিষয়টি জানাজানি হতেই প্রতিবেশীদের মনে সন্দেহ হয়। তাঁরাই পুলিশকে খবর দেন।
বুধবার বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকেই স্তম্ভিত হয়ে যান তমলুক থানার পুলিশ আধিকারিকেরা। তাঁরা দেখেন, বাবার দেহ আঁকড়ে ধরে রয়েছেন মান্তু। কোনও রকমে সেখান থেকে তাঁকে সরিয়ে ভোলানাথের দেহ উদ্ধার করা হয়। বৃদ্ধের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে মান্তুকেও তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, না খেতে পেয়েই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। মেয়েও অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছেন।