প্রতিবেশী জিতলেন কোটি টাকা, আর এক জন কিছুই না পেয়ে করলেন আত্মহত্যা। নিজস্ব চিত্র।
লটারির টিকিট কাটা ছিল তাঁর নেশা। হাজার হাজার টাকা খরচ হয়ে গেলেও কখনও ‘জ্যাকপট’ পাননি তিনি। পরিবারের দাবি, সেই কারণেই গত সোমবার আত্মঘাতী হন ৩২ বছরের সুরজিৎ চন্দ। ঘটনাচক্রে, তার পরের দিনই লটারি পেয়ে কোটিপতি হলেন সুরজিতেরই পড়শি শক্তি বর্মণ। পেশায় তিনি মৎস্যজীবী। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের ডিমারির ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রঘুনাথপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ডিমারির মহিষদহ গ্রামের বাসিন্দা সুরজিৎ। ডিমারি বাজারে সুরজিতের একটি মণিহারি দোকান ছিল। তবে লটারির নেশায় বরাবরই বুঁদ থাকতেন। দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার লটারি কাটতেন। ক্রমেই জাঁকিয়ে বসে সেই নেশা। প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে যান তিনি। বহু চেষ্টার পরেও কোনও পুরস্কার না পেয়ে সোমবার রাতে নিজের বাড়িতেই গলায় ফাঁস দেন তিনি। সুরজিতের পরিবারের দাবি, লটারির নেশাই তাঁর মৃত্যু ডেকে এনেছে।
অন্য দিকে, ডিমারির পাকুড় গ্রামের ফুটপাতে মাছ বিক্রি করে কোনও ক্রমে সংসার চালান শক্তি। মাছ ব্যবসায়ী শক্তিও নিয়মিত লটারির টিকিট কাটতেন। প্রতিবেশীর মৃত্যুর পরের দিন, অর্থাৎ মঙ্গলবারই তিনি লটারিতে ১ কোটি টাকা জেতেন। শক্তি বলেন, “নিয়মিত সামান্য টাকার হলেও লটারির টিকিট কাটতাম। অনেকের নানা নেশা আছে। আমার লটারি কাটার নেশা। তবে ১ কোটি টাকা কোনও দিন পেয়ে যাব এমন অলীক স্বপ্ন কখনও দেখিনি।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘এই টাকায় বাকি জীবনটা ভাল ভাবে কাটবে বলেই আশা করছি।”
পড়শি গ্রামের সুরজিতের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে দুঃখও প্রকাশ করেন শক্তি। তিনি বলেন, “সুরজিৎকে আমি খুব ভাল করেই চিনি। আমার থেকে বছর পাঁচেকের ছোট। ওঁদের একটা ছোট্ট বাচ্চা রয়েছে। কিন্তু লটারির নেশায় সর্বস্ব খুইয়েছিল।’’ কোটি টাকার জ্যাকপট পাওয়া শক্তির কথায়, ‘‘এত লোভ কোনও দিনই ভাল নয়। ছেলেটির পরিবারের কথা ভেবে খুবই খারাপ লাগছে।”