—প্রতীকী চিত্র।
ঝাড়গ্রামে যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ধৃত দু’জনকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। ধৃতদের নাম মহেন্দ্র মিত্তল এবং ডাক্তার সোরেন। দু’জনেই একটি ঠিকাদার সংস্থায় কাজ করেন। আদালতে দাঁড়িয়ে মৃত যুবক সৌরভ সাউয়ের মা প্রতিমা সাউ অভিযুক্তদের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
গত ২২ মে অক্ষয় মাহাতো নামে এক বন্ধুকে নিয়ে বেড়াতে বেরিয়েছিলেন সৌরভ। দুই যুবক যখন জামবনির খাটখুরা এলাকার কাছে, তখন আচমকা তাঁদের স্কুটি থেকে নামিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে কয়েক জনের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জায়গায় একটি রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছিল। যে ঠিকাদার সংস্থা কাজের দায়িত্ব ছিল, তাদের কিছু জিনিসপত্র চুরি গিয়েছে বলে গন্ডগোল শুরু হয়। এর পর চোর সন্দেহে সৌরভ এবং অক্ষয়কে বেধড়ক মারধ করা হয় বলে অভিযোগ। রবিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে সৌরভের। অক্ষয়ের এখনও চিকিৎসা চলছে। ওই ঘটনায় মহেন্দ্র এবং ডাক্তার নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে সোমবার হাজির করানো হয় আদালতে। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ২৭ জুন সৌরভের মা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তার পরে পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। মৃত যুবকের মা আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী যারা, তাদের শাস্তি দিতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার ছেলে চুরি করতে পারে না। কেন তাকে অপবাদ দিয়ে মারধর করে মেরে ফেলা হল?’’ অন্য দিকে, সংবাদমাধ্যমকে ধৃতদের মধ্যে মহেন্দ্র বলেন, ‘‘আমি এখন ঝাড়গ্রামের জামদা এলাকায় থাকি। আমার বাড়ি রাজস্থানে। কী করে ওই ঘটনা ঘটল জানি না। খবর পেয়েছিলাম একটা ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সময় আমি ছিলাম না।’’ ঠিকাদার সংস্থার সাইট ম্যানেজার, ধৃত ডাক্তার সোরেন বলেন, ‘‘আমিও ঘটনার কথা জানি না। বাইরে ছিলাম। তবে যে কাজটা হচ্ছিল, তার দেখাশোনা করি। খবর পেয়ে পুলিশকে জানিয়েছিলাম।’’
দুই পক্ষের সওয়াল জবাবের পর আদালত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন দু’জনকে। সরকারি আইনজীবী অনিল মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় দু’জনকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’’ আর ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহের মন্তব্য, ‘‘তদন্ত চলছে। দু’জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়েছে।’’