প্রতীকী ছবি
বাসে ওঠা নিয়ে বচসার জেরে মারধরে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ার মেজিয়ায়। রবিবার সকালে মেজিয়ার লালবাজার এলাকার ঘটনা। মৃত সরফুল খান (৫৭) ওই এলাকারই বাসিন্দা। তাঁকে মারধরে অভিযুক্ত চার জন পলাতক বলে জানায় পুলিশ। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) বিবেক বর্মা বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে সরফুলের স্ত্রী আগরিন বিবি মেয়ে সরজুমা খাতুনকে চিকিৎসার জন্য রানিগঞ্জে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সরফুল তাঁদের বাসে তুলতে আসেন। অভিযোগ, সরজুমা বাসে ওঠার পরেই, তড়িঘড়ি বাসটি ছেড়ে দেয়। আগরিন বিবি উঠতে পারেননি। কিছু দূর গিয়ে বাস থামলে, তিনি ওঠেন। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাসের কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন সরফুল। সে কারণে কিছু ক্ষণ বাসটি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে। এলাকার বাসিন্দা শেখ শামিম, শেখ হাবিবুলেরা এসে বাস থামিয়ে বাদানুবাদের জন্য সরফুলের সঙ্গে বচসা শুরু করেন বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে, সরফুলের স্ত্রী ও মেয়ে বাসে চড়ে চলে যান।
সরফুলের ভাইপো রকিবুল খানের অভিযোগ, “বাস ছেড়ে যাওয়ার পরে, বচসা হাতাহাতিতে পরিণত হয়। চার জন আমার কাকাকে মারধর করে। বাঁচাতে গেলে, আমাকেও মারধর করা হয়।’’ তাঁর দাবি, মারধরের পরে লুটিয়ে পড়েন সরফুল। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে মেজিয়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে মৃত বলে জানানো হয়।
স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে মাঝ রাস্তা থেকে মেয়েকে নিয়ে ফিরে আসেন আগরিন বিবি। এ দিন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সরফুলের দেহের ময়না-তদন্ত হয়। আগরিন বিবির অভিযোগ, ‘‘আমার স্বামী ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে বাস চালানোর প্রতিবাদ করেছিলেন। সে জন্য ওরা আমার স্বামীকে পিটিয়ে খুন করল! ’’
ঘটনার পরেই অভিযুক্তেরা এবং তাদের পরিবারের অনেকে এলাকা থেকে চম্পট দিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। এক অভিযুক্তের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আত্মীয়ের দাবি, “সরফুল হৃদরোগী ছিলেন। বচসার সময়ে উত্তেজিত হয়ে ওঁর মৃত্যু হয়েছে। মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়।’’ পুলিশ সূত্রের দাবি, সরফুলের শরীরে প্রাথমিক ভাবে তেমন বড় কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্টেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বোঝা যাবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।