—প্রতীকী চিত্র।
বিপুল বিনিয়োগ করে তৈরি হওয়া শহরের মেট্রো প্রকল্পগুলি থেকে আয়ের রাস্তা খুলতে একাধিক উদ্ভাবনী উপায় ভাবতে হচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। বিভিন্ন মনীষীদের নামে তৈরি হওয়া স্টেশনগুলির নাম ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত নানা অসুবিধা থাকায় ওই সব স্টেশন থেকে আয়ের সংস্থান করতে সেখানে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে ভাড়া দেওয়ার জন্য কোনও পরিসর বার করা যায় কি না, সে ব্যাপারেও ভাবনা-চিন্তা করছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, দেশের অন্যান্য মেট্রোর তুলনায় কলকাতা মেট্রোয় ভাড়ার হার কিছুটা কম। ফলে, যাত্রী ভাড়া থেকে মেট্রো পরিচালনার খরচের সামান্য একটা অংশই উঠে আসে। দেশের অন্যান্য মেট্রোর ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের টাকা ছাড়াও দৈনন্দিন পরিচালনার খরচ তুলতে একাধিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
নীতি আয়োগের কর্তাদের একাংশের মতে, মেট্রো পরিচালনার খরচের অন্তত অর্ধেক যাত্রী ভাড়া বহির্ভূত বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আয় করা সম্ভব হলে তবেই উন্নয়নমূলক চাহিদা পূরণ করে দীর্ঘ মেয়াদে মেট্রো পরিষেবা চালিয়ে যাওয়া সহজ হয়। ভর্তুকির বোঝা কমাতে দেশের সর্বত্রই মেট্রো পরিচালনার ক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং রাজ্যের সমান অংশীদারির উপরে জোর দিচ্ছেন তাঁরা। কলকাতা মেট্রোর ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পুরোটাই বহন করতে হয় রেল মন্ত্রককে। ফলে, ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে কলকাতা মেট্রোর ক্ষেত্রেও আয় বাড়ানোর চাপ রয়েছে।
আয় বাড়াতে মেট্রোর পক্ষ থেকে রেক ছাড়াও স্টেশনের নাম ভাড়া দেওয়া সহ একাধিক উদ্ভাবনী পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু মেট্রো সূত্রের খবর, মনীষীদের নামাঙ্কিত স্টেশনের নামের আগে কোনও সংস্থার নাম বসানোর ক্ষেত্রে শুধু যে নীতিগত অসুবিধা আছে তা-ই নয়, বিষয়টিও দৃষ্টিকটু। ফলে, ওই সব স্টেশনের নাম ভাড়া দিয়ে আয়ের পথ কার্যত বন্ধ মেট্রো কর্তৃপক্ষের সামনে।
নির্মীয়মাণ নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোপথের একাধিক স্টেশন বিভিন্ন মনীষীর নামাঙ্কিত। ওই সব স্টেশন থেকে আয়ের রাস্তা খুঁজতে সেখানে বিকল্প বাণিজ্যিক পরিসরের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। নিউ গড়িয়া, রুবি, বেলেঘাটা সংলগ্ন মেট্রো স্টেশনে ওই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আধুনিক সুবিধাযুক্ত ওই সব মেট্রো স্টেশন নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ করার পাশাপাশি ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে সেখানে উপযুক্ত বাণিজ্যিক পরিসর রাখার কথাও ভাবতে হচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে।
যাত্রী ভাড়া বহির্ভূত খাতে মেট্রোর আয় চলতি আর্থিক বছরে এপ্রিল থেকে অগস্টের মধ্যে ৪৬.৫৭ শতাংশ বেড়েছে। বিগত অর্থ বছরে এই সময়সীমায় সেই অঙ্ক ছিল ১১.২১ কোটি টাকা। চলতি বছরে তা ১৬.৪৩ কোটি টাকায় ঠেকেছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। স্টেশনের নাম ভাড়া দেওয়া ছাড়াও একাধিক নতুন পদক্ষেপ করায় এই সাফল্য বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা।