প্রতীকী ছবি।
মানবাধিকার কর্মীরা পুলিশের সাহায্যে তাঁকে গত সোমবার কৃষ্ণনগরের রাস্তা থেকে উদ্ধার করে ভর্তি করেছিলেন জেলা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টে ওয়ার্ড থেকেই ‘নিখোঁজ’ হয়ে গেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণী।
এই ঘটনায় হাসপাতালের রোগী নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও রোগীদের প্রতি চিকিৎসক তথা চিকিৎসা কর্মীদের নজরের ঘাটতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে রোগীর যখন মানসিক সমস্যা রয়েছে এবং তিনি যখন মহিলা, সে ক্ষেত্রে কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর নিরাপত্তায় বাড়তি নজর দিলেন না, উঠেছে সেই প্রশ্নও।
অনেকে আবার প্রশ্ন তুলছেন যে, রোগী নিজে থেকে চলে গিয়েছেন নাকি দায় এড়াতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই আসলে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ‘ছেড়ে’ দিয়েছেন? কারণ, ওই রোগীকে হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে না-রেখে রাখা হয়েছিল মেডিসিন ওয়ার্ডে। এবং মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক বিনোদ দাস তাঁকে ‘রেফারাল ডিসচার্জ’ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। তার পর থেকেই ওই তরুণী নিখোঁজ।
যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ওই রোগী উত্তেজিত, অশান্ত হয়ে পড়ছিলেন। শয্যা থেকে উঠে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। দুপুরের তাঁকে ইঞ্জেকশন দিতে গিয়ে নার্সরা প্রথম জানতে পারেন যে, তিনি ওয়ার্ডে নেই।
এ কথা অবশ্য মানতে নারাজ এপিডিআর-এর কৃষ্ণনগর শাখার সদস্য অমিতাভ সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, “হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সরাই আমাদের প্রথমে জানান যে, তাঁরা মেয়েটিকে ছেড়ে দিয়েছেন। মেয়েটিকে আমরা ভর্তি করেছিলাম। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ওঁর ডিসচার্জ সার্টিফিকেট চাইলে ওঁরা দিতে পারেননি। মেয়েটি পালিয়ে গিয়ে থাকলে তো পুলিশকে জানাতে হবে। সেটাও ওঁরা করেননি। আসলে হাসপাতালে সকলে মিলে কিছু একটা গোপন করতে চাইছেন।”
মনোরোগ বিভাগে শয্যা না-থাকায় ওই তরুণীকে মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক বিনোদ দাসের তত্ত্বাবধানে ভর্তি করা হয়েছিলেন। বিনোদবাবুর দাবি, “মেয়েটিকে মেডিসিন বিভাগ থেকে ছুটি দিয়ে রেফার করেছিলাম বহরমপুরে। কারণ, মনোরোগ বিভাগে ওঁর চিকিৎসা হওয়া উচিৎ। এই ধরনের চিকিৎসার পরিকাঠামো শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নেই। আমারই পরিমর্শে তাঁকে বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছিল। ওঁকে হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ করা হয়নি। কিন্তু এর মধ্যে তিনি নিজেই কোনও ভাবে হাসপাতাল থেকে চলে গিয়েছেন।”